খাগড়াছড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরীর আত্মহত্যার চেষ্টা: গ্রেপ্তার ৪

খাগড়াছড়িতে এক ১৪ বছর বয়সী কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এই ঘটনার পর কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গত বুধবার রাতে খাগড়াছড়ি সদর থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার পরপরই ওই দিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন:
- আরমান হোসেন (৩২)
- ইমন হোসেন (২৫)
- এনায়েত হোসেন (৩৫)
- সাদ্দাম হোসেন (৩২)
এছাড়া, অভিযুক্ত মো. সোহেল ইসলাম (২৩) ও মো. মুনির ইসলাম (২৯) পলাতক রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুন রথযাত্রা মেলায় অংশ নেওয়ার পর রাতে কিশোরী এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। গভীর রাতে ছয়জন যুবক ঘরে ঢুকে ভুক্তভোগীর আত্মীয়দের বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান, সামাজিক লজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে মেয়েটি প্রথমে কিছু প্রকাশ করেনি। কিন্তু মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ১২ জুলাই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে অসুস্থ অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে, জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি পরিবারকে জানায়।
চিকিৎসা ও মানসিক অবস্থা
ভুক্তভোগী বর্তমানে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, “শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাকে গুরুত্বের সাথে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
পুলিশ প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, “মামলা হওয়ার পরপরই আমরা চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী এখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ তার জবানবন্দি নেওয়া হবে।”
সমাজের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর স্থানীয় সমাজে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই সামাজিক নিরাপত্তা ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।
খাগড়াছড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কতটা জরুরি। সমাজের প্রতিটি স্তরে এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আমাদের উচিত এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়ানো।
শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন।