৭ লাখ রোবট ব্যবহার করছে অ্যামাজন

৭ লাখ রোবট ব্যবহার করছে অ্যামাজন
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন সম্প্রতি তাদের রোবটিক্স কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। বর্তমানে অ্যামাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারগুলোতে ৭ লাখেরও বেশি রোবট মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত রয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক রোবট ব্যবহারের বিষয়টি সত্যিই নজরকাড়া।
রোবটের কার্যক্রম
অ্যামাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারগুলোতে রোবটগুলো মানবকর্মীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে। তারা ডেলিভারি প্যাকেজ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা, বিভিন্ন আইটেম বাছাই করা, সর্ট করা এবং কাস্টমাইজ প্যাকেজিংয়ের মতো কাজগুলো সহজেই সম্পন্ন করছে। ফলে, রোবটের কাজ করার বিষয়টি এখন অ্যামাজনের জন্য ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তি নয়, বরং বাস্তবতা।
রোবটিক্সের ইতিহাস
অ্যামাজনের রোবটিক্স কার্যক্রমের শুরু ২০১২ সালে, যখন তারা ৭৭৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিভা সিস্টেম নামক রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণ করে। কিভা’র তৈরি প্রথম রোবটগুলো বারকোড মার্কার অনুসরণ করে ওয়্যারহাউজগুলোতে চলাচল করতে এবং পণ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম ছিল।
বর্তমানে, অ্যামাজনের কাছে রয়েছে মেশিন লার্নিং ও এআই সক্ষমতার অটোনোমাস (স্ব-চালিত) রোবট ‘প্রোটিয়াস’। ২০২২ সালে ন্যাশভিল ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে প্রথম ব্যবহৃত ‘প্রোটিয়াস’ রোবটটি নিজে নিজেই বিভিন্ন বাধা পেরিয়ে ওয়্যারহাউজের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে প্যাকেজ আনা-নেওয়া করতে সক্ষম।
খরচ কমানো ও দ্রুত ডেলিভারি
অ্যামাজন কেন এত বিপুল সংখ্যক রোবট ব্যবহার করছে? বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোবটিক্স কার্যক্রম সম্প্রসারণের মূল কারণ হচ্ছে খরচ কমানো এবং দ্রুততার সঙ্গে পণ্য ডেলিভারি করা। রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে অ্যামাজন প্রতি বছর ১০ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে মর্গ্যান স্ট্যানলি।
কর্মী নিয়োগের সুযোগ
রোবটিক্স কার্যক্রম জোরদার করার ফলে অ্যামাজন কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে, এমন ধারণা ভুল। অ্যামাজন জানিয়েছে, রোবটিক্স কার্যক্রম সম্প্রসারণের ফলে তারা এআই ও মেশিন লার্নিং খাতে নতুন অনেক কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। ফলে, আগের চেয়ে বেশি চাকরি তৈরি হয়েছে।
স্টার্টআপে বিনিয়োগ
অ্যামাজন তাদের রোবটিক্স সক্ষমতা বাড়াতে অপেক্ষাকৃত ছোট স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, কোভ্যারিয়েন্ট নামক স্টার্টআপের তিন প্রতিষ্ঠাতাকে অ্যামাজন তাদের বোর্ডে জায়গা দিয়েছে এবং কোভ্যারিয়েন্ট-এর বেশ কয়েকটি ফাউন্ডেশন মডেলের লাইসেন্স করিয়ে নিয়েছে।
২০২২ সালে ‘অ্যামাজন ইনডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন ফান্ড’ গঠন করে তারা উদীয়মান ও ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করছে। এর ফলে এজিলিটি রোবটিক্স-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, এজিলিটি’র তৈরি দুই পায়ের রোবট ‘ডিজিট’ এখন অ্যামাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
উন্নতমানের রোবট
অ্যামাজনের অন্যতম উন্নতমানের রোবট ‘স্প্যারো’। এটি একটি রোবটিক আর্ম (হাত), যা ২০২৩ সালে টেক্সাসের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে প্রথম নিয়ে আসা হয়। এআই ও কম্পিউটার ভিশন ব্যবহার করে স্প্যারো নিজে থেকেই কনটেইনার থেকে আইটেম তুলে নিতে পারে। এটি ২০০টিরও বেশি পণ্য আলাদা আলাদা করে চিহ্নিত করতে সক্ষম।
ভারি পণ্য উত্তোলন
অ্যামাজনের হারকিউলিস ও টাইটান রোবটগুলো ভারি পণ্য উত্তোলনে বিশেষভাবে সক্ষম। ২০১৭ সালের হারকিউলিস রোবট ১২৫