কর্মক্ষেত্রে এআই এজেন্টের আগমন: ২০২৫ সাল থেকে কি শুরু হবে নতুন যুগ ?
সময়ের সঙ্গে বাড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহার। এবার শোনা যাচ্ছে, ২০২৫ সাল থেকেই কর্মক্ষেত্রে এআই এজেন্ট বা ভার্চুয়াল কর্মীরা কাজ শুরু করতে পারে। ওপেনএআই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান এই বিষয়ে একটি ব্লগ পোস্টে মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এআই এজেন্ট প্রযুক্তির ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজের ধারা এবং উৎপাদনশীলতায় বড় পরিবর্তন আসবে।
এআই এজেন্টের ধারণা ও কার্যক্ষমতা
এআই এজেন্ট এমন একটি প্রযুক্তি যা নিজে থেকে কাজ সম্পাদন করতে পারে। চ্যাটজিপিটি (Chat GPT) এই এজেন্টের একটি উদাহরণ। এআই ফার্মগুলো এই প্রযুক্তিতে বড় বিনিয়োগ করছে এবং মুনাফা বাড়ানোর জন্য কার্যকরী পন্থা হিসেবে এটিকে দেখছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুসারে, পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনজি ইতোমধ্যেই এআই এজেন্ট ব্যবহার শুরু করেছে। ম্যাককিনজির তৈরি এআই সিস্টেম নতুন ক্লায়েন্ট অনুসন্ধান এবং ফলোআপ মিটিং শিডিউল করার মতো কাজ পরিচালনা করতে সক্ষম।
২০২৫ সাল: এআই কর্মীদের যুগ শুরু?
অল্টম্যান বিশ্বাস করেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই এআই এজেন্ট প্রথমবারের মতো কর্মক্ষেত্রে বাস্তবভাবে কাজ শুরু করবে। তিনি তার ব্লগ পোস্টে উল্লেখ করেছেন, “আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা এজিআই (Artificial General Intelligence) তৈরি করতে জানি। এটি এমন একটি বুদ্ধিমত্তা যা মানুষের তুলনায় সামগ্রিকভাবে আরও বেশি কার্যক্ষম।”
নতুন প্রযুক্তি উন্মোচনের পরিকল্পনা
চলতি মাসেই ওপেনএআই “অপারেটর” নামে একটি এআই এজেন্ট উন্মোচনের কথা ভাবছে। এর আগে মাইক্রোসফট তাদের কোপাইলট স্টুডিও পণ্য ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিক চালু করেছে ক্লোড ৩.৫ এআই মডেল। এ প্রযুক্তিগুলো কম্পিউটারে মাউসের কার্সর স্থানান্তর, টেক্সট টাইপ করা, এবং অন্যান্য সাধারণ কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদন করতে সক্ষম।
এআই-এর প্রভাব ও ভবিষ্যৎ
ম্যাককিনজি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে কাজের প্রায় ৩০ শতাংশ সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে। এতে কর্মীদের কাজের ধরন এবং চাহিদায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। অল্টম্যান বলেছেন, “আমরা এখন সুপার ইন্টেলিজেন্স’ তৈরির দিকে মনোনিবেশ করছি, যা মানুষের তুলনায় আরও বেশি স্মার্ট এবং কার্যকর।”
এআই এজেন্ট প্রযুক্তির গুরুত্ব
এআই এজেন্টের উদ্ভাবন কেবল কাজের গতি বাড়াবে না, এটি ব্যবসা এবং কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতিতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো থেকে শুরু করে খরচ কমানো পর্যন্ত এর সুফল ব্যাপক। তবে এআই প্রযুক্তি কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়ার ফলে মানবকর্মীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মীরা যদি এআই ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন করে, তবে এআই এবং মানবকর্মীদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর কর্মপরিবেশ তৈরি হবে।
২০২৫ সাল থেকে কর্মক্ষেত্রে এআই এজেন্টের ব্যবহার শুরু হলে তা হবে প্রযুক্তির এক নতুন যুগের সূচনা। এআই প্রযুক্তির এই দ্রুত অগ্রগতি মানবসমাজ এবং অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে এআই এজেন্টের নীতিমালা এবং মানবসম্পদের উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
Latest News Of Signalbd.com