বিশ্ব

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১০৯ ফিলিস্তিনি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের বর্বর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই তাণ্ডব চলাকালীন গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনাও চলছে, যা ব্যর্থ করে দেওয়া হলো ইসরায়েলের হামলার কারণে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার বিভিন্ন অংশে বিশেষত দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে, যেখানে সহায়তা নিতে গিয়েছিল সাধারণ মানুষ।

গাজার খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রেও ইসরায়েলি গুলিবর্ষণ: ১৬ জন নিহত

মে মাসের শেষ থেকে চলমান এই সংঘাতে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে গুলিবর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা যায়, শুধু খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে গুলিতে কমপক্ষে ৬০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

এই খাদ্য কেন্দ্রগুলো সাধারণ মানুষের জন্য জীবনরেখা হলেও, ইসরায়েলি সেনারা বর্বরভাবে হামলা চালিয়ে এসেছে। ফলে সাধারণ মানুষ সহায়তা নিতে গিয়ে হতাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

গাজা সিটিতেও ব্যাপক তাণ্ডব, আইডিএফের কোয়াডকপ্টার হামলা

একই সময়ে গাজা সিটির বিভিন্ন এলাকায় পুনরায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। বিশেষ করে কোয়াডকপ্টার হামলায় অন্তত ৫ জন মারা গেছেন।

দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস ও আল মাওয়াসি এলাকায় বসতবাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে কমপক্ষে ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ: ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ বারেরও বেশি হামলা

গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল অন্তত ১৪০ বারেরও বেশি হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় নিরীহ জনগণ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৫৬,০০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা কর্তৃপক্ষ জানায়। নিহতদের মধ্যে শিশু, নারী ও বৃদ্ধ রয়েছে অনেকেই।

যুদ্ধবিরতি আলোচনার পেছনে ইসরায়েলের হামলা: বিশ্ববাসীর নিন্দা

আন্তর্জাতিক মহলে গাজায় চলমান এই বর্বরতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তির মধ্যেই হামলা চালানোকে অনেকে নিন্দনীয় বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিশ্ব নেতারা যুদ্ধবিরতি আলোচনা সফল করার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন, যাতে অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ হয় এবং গাজার নিরীহ জনগণের জীবন রক্ষা পায়।

গাজায় মানবিক সংকট: খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা বিপর্যস্ত

এই হামলার ফলে গাজায় মানবিক সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। খাদ্য ও পানীয় জলের সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে, হাসপাতালগুলো চিকিৎসা সেবা দিতে পারেনা। বিদ্যুৎ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা বারবার দ্রুত সাহায্য পৌঁছানোর আবেদন জানিয়েছে, যাতে গাজার সাধারণ মানুষ বাঁচানো যায়।

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয়

গাজা উপত্যকায় এই সহিংসতা থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্ব নেতাদের উচিত ইসরায়েলের ওপর যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য চাপ বৃদ্ধি করা।

এছাড়াও মানবিক সহায়তা ত্বরান্বিত করতে হবে, যাতে গাজার জনগণ প্রাণনাশ ও দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পায়।

সারসংক্ষেপ:

  • গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ১০৯ ফিলিস্তিনি নিহত
  • খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে গুলিতে ১৬ জন নিহত, মে থেকে ৬০০+ প্রাণহানি
  • গাজা সিটিতে আইডিএফ কোয়াডকপ্টার হামলায় ৫ জন নিহত
  • খান ইউনিস ও আল মাওয়াসিতে ১২ জন নিহত
  • গাজায় ১৪০ বার হামলা, মোট প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ৫৬,০০০
  • যুদ্ধবিরতি আলোচনার মাঝেই ইসরায়েলি হামলা, বিশ্বব্যাপী নিন্দা
  • মানবিক সংকট গাজায় তীব্র, খাদ্য ও চিকিৎসা সেবায় ঘাটতি
  • আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তৎপর হতে হবে

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button