বিশ্ব

ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেবে যুক্তরাষ্ট্র, ক্ষুব্ধ ইসলামাবাদ

ভারতের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘোষণার পর পাকিস্তান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ইতিমধ্যে এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

পাকিস্তানের উদ্বেগ

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতকে অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম দেওয়ার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এ পদক্ষেপের কারণে এই অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্যহীনতা আরও তীব্র হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি ফেরানোর প্রচেষ্টায় এটি বাধা হয়ে দাঁড়াবে।”

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা

শাফকাত আলী খান আরও বলেন, “এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি সামগ্রিক ও বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “বাস্তব পরিস্থিতি অগ্রাহ্য করে একপক্ষীয় অবস্থান নিলে শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।”

ট্রাম্পের ঘোষণা

গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন যে, ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করা হবে। এই ঘোষণার ফলে ভারতীয় সামরিক সক্ষমতা আরও জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে যদি চুক্তি হয়, তবে ভারত হবে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্রদেশ এবং ইসরায়েল ও জাপানের বাইরে প্রথম দেশ, যা এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে। এফ-৩৫ বিশ্বের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে একটি। এই যুদ্ধবিমান শত্রুপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে (স্টিলথ) লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

সামরিক ভারসাম্য ও দক্ষিণ এশিয়া

ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়ার সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে। পাকিস্তান মনে করে, এই পদক্ষেপের ফলে তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। পাকিস্তানের সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত যদি এফ-৩৫ পায়, তবে তা তাদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়ার মার্কিন সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। পাকিস্তানের ক্ষোভ এবং উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে এই বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় একটি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button