ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদলকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের ও জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, ছাত্রদল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছে।
ছাত্রদলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেন, “ছাত্রদল প্রচারণা থেকে শুরু করে নানাভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছে। তাদের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম ভোট কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে ভোট চাচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধির নূন্যতমও মানা হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “তারা এমফিলের নামে ভোট ব্যাংক বাড়িয়েছে।”
জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদারও একই অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “ছাত্রদল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোটারদের প্রভাবিত করছে। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য হুমকি।”
নির্বাচনী পরিবেশ ও ভোটারদের প্রতিক্রিয়া
আজ সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীরাও ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও।
ডাকসু ভোটাররা এখন পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেয়ার কথা জানিয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রেই দীর্ঘ ভোটের সারি দেখা গেছে।
ভোটার সংখ্যা ও কেন্দ্রের সংখ্যা
ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন। ডাকসুর ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। মোট ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে দুই হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা, সোয়াট, ডিবি, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডও দায়িত্ব পালন করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশমুখগুলো—শহীদ মিনার, পলাশী, নীলক্ষেত, উদয়ন স্কুল, ফুলার রোড ও দোয়েল চত্বর সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তা–কর্মচারী ও সাংবাদিকেরা প্রবেশ করতে পারছেন।
ভোটারদের প্রত্যাশা
ভোটাররা আশা করছেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করবেন। তাঁরা চান, নির্বাচিত প্রার্থীরা রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবেন।
শিক্ষার্থীরা আরও আশা করছেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে সুসংহত করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। ছাত্রদলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে, নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচনের ফলাফল কী হয় এবং তা শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হয় কি না।
MAH – 12719, Signalbd.com