অন্য ব্যাংকের এটিএম থেকে নগদ উত্তোলনে খরচ বাড়লো

বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করে নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে নতুন সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করেছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি মাসে পাঁচটির বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহককে ভ্যাটসহ সর্বোচ্চ ৩০ টাকা চার্জ দিতে হবে। তবে প্রথম পাঁচটি লেনদেনের ক্ষেত্রে চার্জ আগের মতোই ১৫ টাকা থাকছে। এই নতুন নিয়ম ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
নতুন নির্দেশনার বিস্তারিত
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে:
- প্রথম পাঁচটি লেনদেনের চার্জ: প্রতিবার নগদ উত্তোলনে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা।
- পাঁচটির বেশি লেনদেনের চার্জ: প্রতিবার নগদ উত্তোলনে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা।
- হিসাবের সংক্ষিপ্ত বিবরণী: ৫ টাকা।
- খুদে বিবরণী: ৫ টাকা।
- তহবিল স্থানান্তর: ১০ টাকা।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রথম পাঁচটি লেনদেনের জন্য কার্ড ইস্যুয়িং ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১৫ টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। তবে এর পরবর্তী লেনদেনগুলোর ক্ষেত্রে গ্রাহককে পুরো চার্জ বহন করতে হবে। এছাড়া কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে প্রতি লেনদেনের জন্য এটিএম বুথ স্থাপনকারী ব্যাংককে ৩০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
পিওএস ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের চার্জ
দেশের অভ্যন্তরে পিওএস (পয়েন্ট অফ সেল) ব্যবহার করে নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে:
- ইস্যুয়িং ব্যাংককে লেনদেনপ্রতি সর্বোচ্চ ২০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে।
- ব্যাংক চাইলে এই চার্জ গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে।
এনপিএসবির (ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ) আওতায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতি ব্যবহার করে ভিন্ন ব্যাংকে তহবিল স্থানান্তরের ক্ষেত্রে:
- প্রতিটি লেনদেনের জন্য সর্বোচ্চ ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে।
- এই চার্জ গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে অরিজিনেটিং ব্যাংক।
সরকারি পরিষেবার ফি ও অন্যান্য চার্জ
প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবার চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে।
- ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধে: সর্বোচ্চ ২০ টাকা চার্জ।
- ২৫ হাজার টাকার বেশি পরিশোধে: সর্বোচ্চ ৫০ টাকা চার্জ।
- এমএফএস বা পিএসপি ওয়ালেট ব্যবহার করে লেনদেন: প্রতি লেনদেনে ১ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা চার্জ (ভ্যাটসহ)।
এই পরিবর্তনের পটভূমি ও প্রভাব
এই পরিবর্তনের ফলে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহারের ব্যয় কিছুটা বেড়ে যাবে। ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের নিজ নিজ ব্যাংকের এটিএম ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করবে এবং আন্তঃব্যাংক লেনদেন কমাতে ভূমিকা রাখবে। তবে কিছু গ্রাহকের জন্য এটি অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয় কমাতে সহায়ক হলেও সাধারণ গ্রাহকদের জন্য বাড়তি খরচের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।