শেওড়াপাড়ায় ভবনে আগুন, ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর ব্যস্ত এলাকা শেওড়াপাড়ার শামীম সরণিতে অবস্থিত একটি চারতলা আবাসিক ভবনে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় হঠাৎ আগুন লাগে। বিকেল ৬টা ১৫ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় এবং মাত্র ১৬ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের দল।
আগুন লাগার ঘটনা ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ
ফায়ার সার্ভিসের সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় ভবনের তৃতীয় তলায় হঠাৎ ধোঁয়া দেখা গেলে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় এবং ৬টা ২৯ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। মাত্র ১৬ মিনিটের মধ্যে, অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
সংশ্লিষ্ট ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জানান, “আমরা দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করি। আগুনের মাত্রা বেশি না হলেও তা আশেপাশে ছড়িয়ে পড়লে বড় ক্ষতির আশঙ্কা ছিল।”
আগুন লাগার স্থান ও আশেপাশের পরিবেশ
ঘটনাটি ঘটেছে শামীম সরণির পানির গলি সংলগ্ন একটি চারতলা আবাসিক ভবনের তৃতীয় তলায়। ভবনটির পাশে রয়েছে একটি বাণিজ্যিক মার্কেট এবং কিছু খোলা দোকান, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপে আশপাশের ভবন বা স্থাপনায় আগুন ছড়িয়ে পড়েনি।
কোনো হতাহত বা বড় ক্ষতির খবর নেই
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনের বাসিন্দাদের দ্রুত বের করে আনা হয়েছিল এবং কেউ আটকা পড়েননি বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুনে তৃতীয় তলার কিছু আসবাবপত্র ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
আগুনের উৎস কী?
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুনের সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তদন্ত কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং বিস্তারিত রিপোর্ট শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার সময় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা হঠাৎ ধোঁয়া দেখে ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস দ্রুত আসায় আমরা কিছুটা স্বস্তি পাই।” অনেকে ভবনের নিচে নেমে আসেন এবং নিজের মতো করে পানি ছিটিয়ে সহায়তা করেন।
স্থানীয় দোকানদাররাও জানান, ফায়ার সার্ভিস আসার আগে তাঁরা দোকানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন, যাতে কোনো বিদ্যুৎজনিত দুর্ঘটনা না ঘটে।
ভবিষ্যতের জন্য করণীয় কী?
এ ধরনের ঘটনা বারবারই প্রমাণ করে, শহরের প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা জরুরি। ভবন মালিকদের প্রতি বারবার সতর্ক করা হলেও অনেক সময় তা বাস্তবায়িত হয় না। ফলে এ ধরনের ছোট অগ্নিকাণ্ডও বড় দুর্ঘটনায় রূপ নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ফায়ার সার্ভিসের ওপর নির্ভর না করে প্রতিটি বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, নিয়মিত বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা পরীক্ষা এবং বাসিন্দাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।
সারসংক্ষেপ
শেওড়াপাড়ার এই অগ্নিকাণ্ড বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেল ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে। তবে এটি আবারও প্রমাণ করল, শহরের ভবনগুলোর অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এখন সময় এসেছে সচেতনতা ও প্রস্তুতির মধ্যে সমন্বয় ঘটানোর।
এম আর এম – ০৪৬৩, Signalbd.com