হামাসের দাবি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
হামাসের প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ১০ জন জীবিত জিম্মি এবং ১৮ জনের মরদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত। এর বিনিময়ে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ হামাসের প্রস্তাবকে “সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, হামাসের প্রস্তাব যুদ্ধবিরতির মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর হামাসের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৫৪,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো উপত্যকা। জাতিসংঘ গাজাকে বিশ্বের “সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান” হিসেবে ঘোষণা করেছে, যেখানে পুরো জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও ভবিষ্যৎ
গত মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বেশ কয়েকবার আলোচনা হলেও গভীর মতপার্থক্যের কারণে কোনো সমাধান আসেনি। ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধ থামাতে হলে হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র হতে হবে। অন্যদিকে হামাস বলছে, তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে না; বরং ইসরায়েলকে গাজা থেকে সেনা সরাতে হবে এবং যুদ্ধ বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
গাজায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বিশ্বাস ও সমঝোতার প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতা ও চাপের মাধ্যমে একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে।