
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ কম হলেও এবার পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার—লিটন দাস, নাহিদ রানা এবং রিশাদ হোসেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পিএসএলে খেলার ছাড়পত্র দিয়েছে।
বিসিবির অনুমোদন ও প্রস্তুতি
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস নিশ্চিত করেছেন যে এই তিন ক্রিকেটার পিএসএলে অংশ নেওয়ার জন্য অনুমতি পেয়েছেন। ১১ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্ট চলাকালীন বাংলাদেশে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসবে জিম্বাবুয়ে দল। এতে করে নাহিদ রানা ও লিটন দাসের অংশগ্রহণ নিয়ে কিছু শঙ্কা থাকলেও বিসিবি শেষ পর্যন্ত তাদের খেলার অনুমতি দিয়েছে।
লিটন ও রিশাদের পূর্ণাঙ্গ মৌসুম, নাহিদের সীমিত অংশগ্রহণ
লিটন দাস এবং রিশাদ হোসেন পিএসএলের সম্পূর্ণ মৌসুম খেলতে পারবেন। লিটন দাস করাচি কিংসের হয়ে খেলবেন, আর লাহোর কালান্দার্সের জার্সিতে দেখা যাবে রিশাদ হোসেনকে। তবে নাহিদ রানার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তিনি পুরো মৌসুমে অংশ নিতে পারবেন না, কারণ তাকে বাংলাদেশ টেস্ট দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
নাহিদের অংশগ্রহণ ও ম্যাচ মিসের হিসাব
নাহিদ রানা পিএসএলে অংশগ্রহণ করবেন পেশোয়ার জালমির হয়ে। তবে বিসিবির ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নীতির কারণে তিনি পুরো মৌসুমে খেলতে পারবেন না। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ ২০ এপ্রিল শুরু হবে সিলেটে। তার দল পেশোয়ার জালমি ১২ এপ্রিল প্রথম ম্যাচ খেলবে, যার মানে নাহিদ ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ খেলতে পারবেন। ২০ এপ্রিলের পর তার অংশগ্রহণ নির্ভর করবে টেস্ট সিরিজের সময়সূচির ওপর।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা এই টুর্নামেন্টগুলোতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ তুলনামূলক কম। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় বিভিন্ন লিগে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন।
পিএসএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সম্ভাবনা
লিটন দাস ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। করাচি কিংসের জার্সিতে তিনি ব্যাট হাতে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটি দেখার বিষয়। অন্যদিকে, রিশাদ হোসেনের লাহোর কালান্দার্স দলে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের তরুণ লেগ-স্পিনারদের জন্য একটি বড় দৃষ্টান্ত।
নাহিদ রানা একজন উদীয়মান পেসার হিসেবে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। পিএসএলে তার বোলিং দক্ষতা আরও শাণিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এখন ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে তারা আন্তর্জাতিক এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের আরও খেলোয়াড় বিদেশি লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
উপসংহার
পিএসএলে লিটন দাস, নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। এটি তাদের জন্য যেমন একটি অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ, তেমনি দেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, তারা এই সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পারেন এবং পিএসএলে নিজেদের কতটা প্রমাণ করতে পারেন।