ফের বাড়ছে ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম, বিটকয়েন ছুঁয়েছে ৯৩ হাজার ডলার

চলতি বছরের শুরু থেকে পতনের মুখে থাকা ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে নতুন করে ঊর্ধ্বগতির হাওয়া লেগেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েনের দাম বেড়েছে ১০.৭১ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে প্রতিটি বিটকয়েনের দাম পৌঁছেছে ৯৩ হাজার ৪৭৪ ডলারে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ সঞ্চার করেছে।
ক্রিপ্টো বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি শুধু বিটকয়েনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আরেক জনপ্রিয় ভার্চুয়াল মুদ্রা ইথারের দামও সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ১১.২৪ শতাংশ। এছাড়া, বাইন্যান্স কয়েনের দাম বেড়েছে ১.৮৪ শতাংশ, বর্তমানে প্রতিটি মুদ্রা বিক্রি হচ্ছে ৬০২.০৬ ডলারে। একইভাবে, সোলানার দাম বেড়েছে ১৩.৫১ শতাংশ, এবং বর্তমানে প্রতিটি সোলানা বিক্রি হচ্ছে ১৫২.৪০ ডলারে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম বৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মূল্যস্ফীতির চাপ, এবং ঐতিহ্যবাহী বিনিয়োগের তুলনায় ক্রিপ্টোকারেন্সির উচ্চ রিটার্নের সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে। এছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্রিপ্টো বাজারে ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির প্রতি আস্থা বৃদ্ধিও এই ঊর্ধ্বগতিতে ভূমিকা রাখছে।
তবে, ক্রিপ্টো বাজারের এই উত্থানের পাশাপাশি ঝুঁকির বিষয়টিও উপেক্ষণীয় নয়। সম্প্রতি জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাকাররা প্রেমের ফাঁদে ফেলে হাজার কোটি ডলার হাতিয়ে নিচ্ছে, যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে লেনদেন করা হচ্ছে। এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ক্রিপ্টো বাজারের নিরাপত্তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার সঙ্গে ক্রিপ্টো বাজারে প্রবেশের পরামর্শ দিচ্ছেন। ক্রিপ্টোকারেন্সির দামে উচ্চ অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগের আগে পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা এবং ঝুঁকি বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরি। তবে, ব্লকচেইন প্রযুক্তির সম্ভাবনা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতা ভবিষ্যতে এই বাজারের আরও প্রসারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ক্রিপ্টো বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্যও নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। তবে, দেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ এখনও স্পষ্ট না হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এই বাজারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
আপাতত, ক্রিপ্টো বাজারের এই নতুন ঊর্ধ্বগতি বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যায়, সেটি নির্ভর করবে বিশ্ব অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার ওপর।