রাজস্ব পরিস্থিতি ও খারাপ ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সফররত প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি এবং ব্যাংক খাতের খারাপ ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে।
আইএমএফের প্রতিনিধিদলের অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক
আজ অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এর সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আইএমএফের মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক পর্যালোচনা করবে। জুন মাসে তাদের পরবর্তী বৈঠকে ঋণের দুই কিস্তির বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজস্ব আদায় ও করনীতি নিয়ে আলোচনা
আইএমএফ প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর উপায় এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আইএমএফ শুল্ক ও কর নীতির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেছে, তবে ভ্যাট-এর একক হারের বিষয়টি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, কারণ সরকার একক ভ্যাট হারের ব্যবস্থা করতে পারবে না।
আইএমএফ বাংলাদেশের কর জাল সংকীর্ণ হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলে, এখানে লাখ লাখ শূন্য রিটার্ন জমা দেওয়া হয়, যা কর আদায়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা ও খারাপ ঋণ
আইএমএফের প্রতিনিধিদল বৈঠকে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং খারাপ ঋণ (নন-পারফর্মিং লোন) কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেছে। অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতে আইন সংশোধন নিয়ে আইএমএফ আলোচনা করেছে এবং কীভাবে খারাপ ঋণ কমানো যাবে, সেই বিষয়েও উপদেশ প্রদান করেছে।
আগামী কিস্তির অর্থ ছাড়ের শর্ত
আইএমএফ প্রতিনিধিদল জানিয়েছেন, আগামী মে-জুন মাসে তারা বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যালোচনা করবে এবং বাজেট ঘাটতি, বিদেশি মুদ্রার মজুত, এবং কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য এই বিষয়গুলোর মূল্যায়ন করা হবে।
বাংলাদেশের সংস্কার বিষয়ক মনোভাব
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের প্রস্তাবিত সংস্কার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে, এবং সরকারের পক্ষ থেকে এই সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করা হয়েছে।
আইএমএফের উদ্বেগ বাংলাদেশে রাজস্ব আদায় এবং ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলার পরিস্থিতি সম্পর্কে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সংক্রান্ত বৈঠক এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক বড় পরীক্ষা হতে চলেছে।