কয়েক দশকের ছায়া যুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইসরায়েল ও ইরান

আজ সকাল খুব তাড়াতাড়ি, ইসরায়েলের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ইরানের ভূখণ্ডে এক নতুন দিন উন্মোচিত হলো। দীর্ঘ দিন ধরে গোপনে চলা ছায়া যুদ্ধের পর এবার উভয় পক্ষ প্রকাশ্যে সংঘাতের ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে। এই সাম্প্রতিক হামলা শুধু সামরিক একধাপ নয়, বরং দুই দেশের মধ্যকার দশকের অন্ধকার দ্বন্দ্বের ইতিহাসের এক বিশাল পর্বের সূচনাও বটে।
প্রেক্ষাপট: দশকের ছায়া যুদ্ধের ইতিহাস
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার শত্রুতা নতুন কিছু নয়। প্রায় চার দশকের অধিক সময় ধরে তারা স্থল, সমুদ্র, আকাশ এবং এমনকি সাইবার স্পেসে একে অপরের বিরুদ্ধে গোপন হামলা চালিয়ে আসছে। এই দ্বন্দ্বের মূল কাহিনী শুরু হয় ১৯৭৯ সালে, যখন ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পরিনতি হিসেবে শিয়াপন্থী ধর্মতন্ত্রভিত্তিক নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৭৯: ইরানের বিপ্লব
ইরানের বিপ্লব কেবল অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, বরং এর ফলশ্রুতিতে ইরানের বিদেশনীতি এবং কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও বড় পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। বিপ্লবের পর, ইরান ইসরায়েলকে ‘মিত্র দেশ’ হিসেবে দেখার পরিবর্তে প্রতিপক্ষ হিসেবে ঘোষণার কৌশল গ্রহণ করে। এই ঘটনাকে ধ্রুব সত্য বলে তুলে ধরা যায়, যার প্রভাবে পরবর্তীতে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল সংঘর্ষের সূচনা হয়।
১৯৮২: হিজবুল্লাহয়ের প্রতিষ্ঠা
লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়, ইরানের শিয়া মুসলিম নেতারা সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ গড়ে তোলেন। এই সংগঠনটি পরবর্তীকালে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হয়ে, সীমান্তে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়াবহ শত্রু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
১৯৮৩: লেবাননে গোপন হামলার আঘাত
পরবর্তীকালে, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ লেবাননে আত্মঘাতী বোমা হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করে যায়। এই হামলার ফলে ইসরায়েল বেশ কিছু সময়ের জন্য লেবাননের বেশিরভাগ এলাকা থেকে প্রত্যাহারিত হতে বাধ্য হয়।
১৯৯২-৯৪: আর্জেন্টিনায় সংঘটিত হামলা
আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে ইসরায়েলি দূতাবাস এবং একটি জুইশ সেন্টারের বিরুদ্ধে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অনেক লোকের প্রাণ হারিয়ে যায়। এই হামলার পেছনে ইরান ও হিজবুল্লাহকে দায়ী করার অভিযোগ উত্থাপিত হলেও, উভয় পক্ষই এই অভিযোগকে তাখাতিয়ে ফেলতে ব্যর্থ হয়।
২০০২: ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির উদ্বেগ
ইরানের গোপনে চালু থাকা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি আন্তর্জাতিক স্তরে চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ঘটনায় ইসরায়েল তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধের আহ্বান জানায়, যা পরবর্তীতে দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সম্ভাবনা দ্বিগুণ করে দেয়।
২০০৬: ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধ
লেবাননে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘর্ষে, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ মধ্যে মাসব্যাপী যুদ্ধে লিপ্ত হয়। তবে, ভারী অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হলেও হিজবুল্লাহকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করা যায়নি। অবশেষে, সমঝোতার মাধ্যমে সেই যুদ্ধে বিশ্রাম আনা হয়।
২০০৯: ইরানের নেতার কন্ঠে ‘ক্যানসার’ উপমা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক বক্তৃতায় ইসরায়েলকে ‘একটি বিপজ্জনক ও প্রাণঘাতী ক্যানসার’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ বক্তব্য দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান মনস্তাত্ত্বিক শত্রুতার প্রতিচ্ছবি স্বরূপ।
২০১০: সাইবার হামলার সূচনা
ইরানের একটি পরমাণু কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের স্থাপনায় সাইবার হামলার মাধ্যমে স্টাক্সনেট নামক ভাইরাস চালু করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই হামলার পেছনে অভিযুক্ত হওয়ায় সাইবার স্পেসে সংঘাতের নতুন দিক উন্মোচিত হয়।
২০১২: ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীর হত্যাকাণ্ড
নিজ গাড়িতে বসে থাকা অবস্থায় বোমা বিস্ফোরিত হয়ে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোস্তফা আহমাদি-রোশনকে লক্ষ্য করে অপ্রত্যাশিত এক হামলা পরিচালনা করা হয়। স্থানীয় সূত্র অনুসারে, এই হামলার পেছনে ইসরায়েলের ভূমিকা থাকতে পারে।
২০১৮: সিরিয়ায় সামরিক অভিযান
সিরিয়ায়, ইরানের সামরিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আক্রমণ সৃজন করে নতুন জাগরণের। সিরিয়ার অভ্যন্তরে রাজনৈতিক ও সামরিক জটিলতা থাকায়, এই হামলায় ইরানের ভূমিকা আরও ব্যাখ্যাহীন হয়ে ওঠে।
২০২০: কাসেম সুলাইমানির হত্যাকাণ্ড
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের বিদেশি শাখার প্রধান কাসেম সুলাইমানিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বাগদাদে একটি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত করা হয়। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইরান বিভিন্ন মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার উদ্যোগ গ্রহণ করে, যার ফলে প্রায় ১০০ জন মার্কিন সামরিক সদস্য আহত হন।
২০২১: পরমাণু কর্মসূচির পরিকল্পনাকারী হত্যাকাণ্ড
মোহসেন ফখরিজাদেহকে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ অভিযানের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। যদিও ইরান দীর্ঘদিন ধরে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে, তবুও এই ঘটনাটি সংঘর্ষে আরো ঘর্ষণের বীজ বপন করে।
২০২২: যুক্তরাষ্ট্র–ইসরায়েল চুক্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের এক যৌথ প্রতিশ্রুতিনামায় ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র গ্রহণে বাধা দেওয়ার বিষয়ে একমত হন। এই চুক্তি, যা ‘জেরুজালেম ঘোষণার’ অংশ হিসেবে বিবেচিত, ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও চাপের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
এপ্রিল ২০২৪: ইরানি দূতাবাসে হামলার ঝড়
সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে সন্দেহভাজন ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে রেভল্যুশনারি গার্ডের সাত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিহত হন। যদিও ইসরায়েল এই হামলার দায় স্বীকার বা অস্বীকার করতে পারে নি, তবে এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর এক নতুন দাগ স্বরূপ।
অক্টোবর ২০২৪: পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময়
গত বছরের সেপ্টেম্বরের একটি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে, ইরান অক্টোবরে ইসরায়েলে ১৮০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর পরবর্তীতে ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলার মাধ্যমে পাল্টা আক্রমণের ঘোষণা দেয়। যদিও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সীমিত ছিল বলে ইরান দাবি করে, তবে এই ক্রিয়া দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে তোলে।
বর্তমান সংঘাত: ‘রাইজিং লায়ন’ অভিযানের সূচনা
২০২৫ সালের জুন মাসে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযান ‘রাইজিং লায়ন’ নামে পরিচিত। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল তেহরানের পারমাণবিক অবকাঠামো এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে আঘাত হানা। এই হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান, রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান এবং কয়েকজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানীর কীর্তি বিলুপ্তির ঘটনায় গিয়ে থাকে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, এই হামলায় মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, হোসেইন সালামি, ফারেদুন আব্বাসি এবং মোহাম্মদ মেহদি তেহরাঞ্চির মতো উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বদের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়।
ইসরায়েলের এই প্রকাশ্য হামলার সাথে সাথে ইরানের পাল্টা হামলার আশঙ্কাও দিন দিন বাড়ছে। ইরানের সামরিক ও প্রতিরক্ষা দপ্তর ইতিমধ্যেই দ্রুত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে এ সংঘাতের পরিণতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা খুবই কঠিন।
ছায়া যুদ্ধ থেকে প্রকাশ্য সংঘাতে: কূটনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষণ
এই দীর্ঘদিনের গোপন সংঘাতের ইতিহাসে, ইসরায়েল ও ইরান উভয়েই বিভিন্ন ধরণের কৌশল ও অস্ত্র ব্যবহার করেছে। একদিকে একে অপরকে গোপনে ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে পরবর্তীকালে বড় ধরনের সামরিক হুমকির দিকে ধাপ ফেলেছে, অপরদিকে সাইবার স্পেস থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার মাধ্যমে সরাসরি আক্রমণ চালিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই দুই দেশের মধ্যে চলা ছায়া যুদ্ধ পর্যায়ক্রমে প্রকাশ্যে সংঘাতে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই পরিবর্তন শুধুমাত্র সামরিক কৌশলের পরিবর্তন নয়, বরং কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপরও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য নানা ধরণের আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য হল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পূর্বেও মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা অবস্থা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন—এ অঞ্চলে মার্কিন কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কারণ পরিস্থিতি দিন দিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। যদিও বর্তমান প্রশাসন এ নিয়ে কিছুটা ভিন্ন রণনীতি অনুসরণ করছে, তথাপি ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এ ধরণের সতর্কবার্তা নতুন কিছু নয়।
কূটনৈতিক চাপ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান এই প্রকাশ্য সংঘাত নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের ছড়াছড়ি দেখা দিচ্ছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা উভয় পক্ষকে সহিংসতা বিরতি ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ঘোষণার মাধ্যমে জানিয়েছে, তারা এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত নয়, তবে দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী হলে তা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রেও এই সংঘাত দুর্ব্যবহারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক অবস্থানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশের মধ্যে মতবিরোধ ও দ্বন্দ্বের সম্ভাবনা বিদ্যমান। এই পরিস্থিতিতে সকল পক্ষের জন্য জরুরি হলেও শীতল কূটনীতি এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ আলোচনা অতি প্রয়োজনীয়।
মানবিক দৃষ্টিকোণ: সাধারণ মানুষের কষ্ট ও সংকট
দীর্ঘদিনের এই গোপন সংঘাত প্রকাশ্যে রূপ নেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। সামরিক হামলা, ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণ এবং বিমান হামলার ফলে নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির ওপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলা হচ্ছে। তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরে মানুষের জীবনযাত্রা ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। অসংখ্য পরিবার হতাহত ও আহত হয়েছে। আবাসিক ভবনগুলো ধ্বংস, আর স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার ছায়া বিরাজ করছে।
মানবিক সেবা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এই সংঘাতের প্রভাব পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমন খাদ্য, পানি এবং ওষুধের অভাব দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ও অনাথ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো দ্রুত সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছে, তবে পরিস্থিতি ততোটা সহজ নয়।
ভবিষ্যতের দিশা: সংঘাতের পরিণতি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
ইসরায়েল ও ইরানের এই প্রকাশ্য সংঘাতের পরিণতি পূর্বাভাস করা অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা একমত যে—যদি দ্রুত শান্তির আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনার চেষ্টা না করা হয়, তবে এই সংঘাত উন্নত স্তরে গিয়ে আসলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ডুবে যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উচিত ভিন্ন ভিন্ন কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে উভয় পক্ষকে শান্তি আলোচনায় আনার চেষ্টা করা। এতে করে সামরিক সংঘাতের পাশাপাশি মানবিক সংকট এড়িয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে। সেইসাথে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে এনে, অঞ্চলের পুনর্নির্মাণে সহায়তা করা জরুরি।
দশকের ছায়া যুদ্ধের পর এবার উভয় দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে সাফ হওয়ায়, ইসরায়েল ও ইরানের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় آغاز হয়েছে। এই প্রকাশ্য সংঘাত কেবল সামরিক ও কৌশলগত পরিবর্তন নয়, বরং আন্তর্জাতিক কূটনীতি, অর্থনীতি এবং মানবিক সেবার ক্ষেত্রেও গভীর প্রভাব ফেলবে।
ভবিষ্যতে, এই সংঘাতের প্রভাব যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক ভারসাম্য প্রচণ্ডভাবে বদলে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত হয়ে দ্রুত সমাধানের পথে কাজ করা আজকের দিনের সবচেয়ে জরুরি প্রস্তাব।
সিঙ্গনালবিডি ডট কম আপনাদের সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল ঘটনার সমসাময়িক বিশ্লেষণ প্রদান করছে। চলমান এই সংঘাত এবং এর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে থাকুন।