বিশ্ব

সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি লতিফা আল-দ্রুবির আরবি ভাষা ও সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন

সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি লতিফা আল-দ্রুবি সম্প্রতি আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ইদলিবের বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারাআ আল-জুলানী নিজ হাতে স্ত্রীর হাতে সনদ তুলে দেন।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অতিথি উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে রাষ্ট্রপতি নিজেই ফার্স্ট লেডির হাতে সনদ তুলে দেওয়ার মুহূর্তটি উপস্থিত সবার কাছে বিশেষ আবেগঘন হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, লতিফা আল-দ্রুবি আরবি ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।

লতিফা আল-দ্রুবির শিক্ষাজীবন ও ব্যক্তিগত পটভূমি

ফার্স্ট লেডি লতিফা আল-দ্রুবি ১৯৮৪ সালে সিরিয়ার হোমস প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি শিক্ষায় আগ্রহী ছিলেন এবং পরিবার ও শিক্ষকবৃন্দের সহযোগিতায় তিনি উচ্চশিক্ষা অর্জনে মনোযোগী হন। দীর্ঘ অধ্যবসায়ের পর তিনি আরবি ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করতে সক্ষম হন।

শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি লতিফা আল-দ্রুবি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সৌদি আরবে উমরা পালন করেছেন, তুরস্কের আঙ্কারায় তুরস্কের ফার্স্ট লেডির সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় কূটনীতিতেও ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

রাষ্ট্রপতি আহমাদ আল-শারাআ আল-জুলানীর নেতৃত্ব

২০২৫ সালের শুরুতে আহমাদ আল-শারাআ আল-জুলানী সিরিয়ার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে শিক্ষা, সমাজ ও জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফার্স্ট লেডির ডিগ্রি গ্রহণ সেই চেষ্টার একটি প্রতীকী দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি আল-শারাআ আল-জুলানী বলেন, “আমাদের দেশের জন্য শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। লতিফা আল-দ্রুবি যেমন নিজে শিক্ষায় সফল হয়েছেন, তেমনি তিনি অন্যদের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠবেন।”

সমাবর্তন অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত

ইদলিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি। মঞ্চে রাষ্ট্রপতির হাতে সনদ গ্রহণের দৃশ্যটি উপস্থিত সবার জন্য একটি আবেগঘন ও অনুপ্রেরণামূলক মুহূর্ত হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লতিফা আল-দ্রুবি তাঁর মাস্টার্স প্রোগ্রামে চমৎকার ফলাফল অর্জন করেছেন।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তারা শিক্ষার গুরুত্ব এবং সমাজে নারীর অবদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে ফার্স্ট লেডির সাফল্য দেশের অন্যান্য নারীদের জন্য একটি প্রেরণার উৎস হিসেবে ধরা হচ্ছে।

লতিফা আল-দ্রুবির আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ড

ফার্স্ট লেডি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছেন। সৌদি আরবে উমরা পালনের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সভায় উপস্থিত ছিলেন। তুরস্কের আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি সিরিয়ার কূটনীতিতে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখছেন।

এই ধরনের কর্মকাণ্ড সিরিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে মজবুত করার পাশাপাশি দেশের কূটনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফার্স্ট লেডির আন্তর্জাতিক উপস্থিতি দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শিক্ষা, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতীকী মূল্য

লতিফা আল-দ্রুবির ডিগ্রি গ্রহণের ঘটনা কেবল শিক্ষাগত অর্জন নয়; এটি সিরিয়ার সমাজে শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের একটি প্রতীক। রাষ্ট্রপতি আহমাদ আল-শারাআ আল-জুলানীর নেতৃত্বে শিক্ষা ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে পরিবর্তনগুলি আনা হচ্ছে, ফার্স্ট লেডির সাফল্য তা আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের উদাহরণ দেশের যুব সমাজকে শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করবে। নারীর শিক্ষা ও সামাজিক ভূমিকা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পথ সুগম হবে।

ফার্স্ট লেডির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

লতিফা আল-দ্রুবি ভবিষ্যতে শিক্ষা, সমাজ ও নারীর ক্ষমতায়নমূলক কার্যক্রমে আরও সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষামূলক এবং সাংস্কৃতিক প্রকল্পে অংশগ্রহণ করবেন। তাঁর লক্ষ্য দেশের যুব সমাজকে শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, ফার্স্ট লেডির নেতৃত্বে নারী শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের সামাজিক ও শিক্ষামূলক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সারসংক্ষেপ

সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি লতিফা আল-দ্রুবি তাঁর দীর্ঘদিনের অধ্যবসায়ের পর আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি আহমাদ আল-শারাআ আল-জুলানীর হাতে সনদ গ্রহণের মুহূর্তটি দেশের সামাজিক ও শিক্ষামূলক অঙ্গনে এক অনুপ্রেরণামূলক দৃশ্য হিসেবে ধরা হচ্ছে।

ফার্স্ট লেডির এই সাফল্য শিক্ষার গুরুত্ব, নারীর ক্ষমতায়ন এবং দেশের সামাজিক উন্নয়নের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি সিরিয়ার কূটনীতিতে নারী নেতৃত্বের শক্তি প্রদর্শন করছে।

এ ঘটনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যেই প্রশংসা জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফার্স্ট লেডির সাফল্য দেশের শিক্ষা ও সমাজকে আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার কাজ করবে।

MAH – 12696,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button