বিশ্ব

পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তুরস্ক-আজারবাইজান

পাকিস্তানের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মহাকাব্যিক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছে তুরস্ক ও আজারবাইজানের সেনারা। এই অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ শুধু দুই দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রতিফলনই নয়, বরং মুসলিম বিশ্বের ঐক্যেরও প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কুচকাওয়াজের দিন ও স্থান

বুধবার (১৩ আগস্ট) ইসলামাবাদের সামরিক প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয় এই বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ। হাজার হাজার দর্শক পতাকা ওড়ানো, সামরিক ব্যান্ডের সুর এবং মার্চপাস্টের গৌরবময় দৃশ্য উপভোগ করতে ভিড় জমান।

সম্মান ও অভ্যর্থনা

তুর্কি ও আজারী সেনাদের যখন মার্চপাস্ট শুরু হয়, তখন পুরো স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানায়। পাকিস্তানি নাগরিকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে “ভ্রাতৃত্ব” এবং “ঐক্যের” স্লোগান দেন।
প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরসহ শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতারা।

প্রেসিডেন্ট জারদারি তুর্কি ও আজারবাইজানের সেনাদের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বুকে হাত রেখে সালাম গ্রহণ করেন। এটি ছিল কূটনৈতিক সৌহার্দ্যের এক আবেগঘন মুহূর্ত।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

পাকিস্তান ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর নেতৃত্বে তৎকালীন হিন্দুস্তানের মুসলিমরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাকিস্তান গঠন করে।
সেই সময় বৃহত্তর বাংলার পূর্বাঞ্চলও পাকিস্তানের অংশ ছিল, যা পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশে পরিণত হয়।

পাকিস্তান–তুরস্ক–আজারবাইজান: কৌশলগত সম্পর্ক

তুরস্ক, আজারবাইজান ও পাকিস্তান সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে।

  • সামরিক সহযোগিতা: যৌথ সামরিক মহড়া, অস্ত্র প্রযুক্তি বিনিময়, প্রতিরক্ষা চুক্তি
  • কূটনৈতিক সমর্থন: জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে একে অপরের পক্ষে অবস্থান
  • অর্থনৈতিক বিনিয়োগ: বাণিজ্য, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে যৌথ প্রকল্প

এই কুচকাওয়াজে তুরস্ক ও আজারবাইজানের অংশগ্রহণকে বিশ্লেষকরা তিন দেশের মধ্যে কৌশলগত ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের নতুন উচ্চতা হিসেবে দেখছেন।

জনমতের প্রতিক্রিয়া

প্যারেডে উপস্থিত অনেকেই বলছেন, মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এটি ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী বার্তা দেবে। ইসলামাবাদের বাসিন্দা মুহাম্মদ ফাহিম বলেন –

“আমরা গর্বিত যে আমাদের স্বাধীনতা দিবসে আমাদের ভাই দেশগুলোর সেনারা অংশ নিয়েছে। এটি প্রমাণ করে আমরা একে অপরের পাশে আছি।”

পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের এই প্যারেড শুধুমাত্র সামরিক শক্তি প্রদর্শনের অনুষ্ঠান ছিল না; এটি ছিল কূটনৈতিক সম্পর্কের উদযাপন এবং মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। তুরস্ক ও আজারবাইজানের সেনাদের অংশগ্রহণ পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদা ও বন্ধুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।

MAH – 12328 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button