ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন: বাধা দিলে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনার মধ্যেই উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আজ শনিবার (২৩ আগস্ট) সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “যদি কেউ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় বা করে, তবে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে সকল কিছু প্রকাশ করব।”
উপাচার্য এই মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আলোচনা সভায়, যা ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দেন।
নির্বাচনের দিকে জাতির নজর
ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “পুরো জাতি ডাকসু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হোক। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ধাপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সকল অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। অতীতের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিটি পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আহ্বান
উপাচার্য বলেন, “নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। আমরা চাই, সকল ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষার্থীরা মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করুন। কোনও সহিংসতা, বাধা বা অন্যায় ঘটলে আমরা তা প্রতিহত করব।”
তিনি বিশেষভাবে সেনাবাহিনীসহ সকল নিরাপত্তা সংস্থা ও অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানান, যাতে ভোটাভুটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্র সংগঠনগুলোর আচরণ আশাব্যঞ্জক
উপাচার্য জানান, “এখন পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর আচরণ আশাব্যঞ্জক। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি। যে কোনও মুহূর্তে কেউ নির্বাচনকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে আমি প্রশাসনিক ও আইনি পদক্ষেপ নেব।”
ঢাবি প্রশাসন ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও, ভোট কেন্দ্রগুলোতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ এবং ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব
ড. নিয়াজ আহমদ খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নির্বাচনে অংশগ্রহণ একটি অধিকার, কিন্তু এটি যেন দায়িত্বের সঙ্গে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ভোটদান শুধুমাত্র অধিকার নয়, এটি শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্বও বটে। সকলকে আহ্বান জানাই, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের মাধ্যমে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব নির্বাচন করুন।”
ডাকসু নির্বাচনের গুরুত্ব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নয়, দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেও গুরুত্ব বহন করে। ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক চেতনা, নেতৃত্বের গুণাবলী এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করে। প্রতিটি শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ দেশের শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ায়।
সংক্ষেপে:
- ডাকসু নির্বাচনে বাধা দিলে উপাচার্য দায়িত্ব ছেড়ে দিবেন।
- পুরো জাতি নির্বাচনকে দেখছে; শান্তিপূর্ণ ভোটের আহ্বান।
- ছাত্র সংগঠনগুলোর আচরণ ইতিমধ্যেই আশাব্যঞ্জক।
- প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
- শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব হলো শান্তিপূর্ণভাবে ভোটে অংশগ্রহণ করা।
MAH – 12445 , Signalbd.com