হজের সময় বিমান ভাড়া কমাতে কাজ করবে মন্ত্রণালয়: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, আসন্ন হজের সময় বিমান ভাড়া কমাতে সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং হজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করবে। প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, সৌদি সরকারের অনুমতি পেলে হাজিদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করতেও সরকার আগ্রহী।
ঘটনার বিস্তারিত
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে বাংলাদেশ হজ একাডেমি আয়োজিত ‘সহজ হজ ফাইন্যান্সিং ও সাশ্রয়ী হজ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে আমি পুরনো দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেব। তবে আগামী সরকারের জন্য একটি কার্যকর হজ ব্যবস্থাপনা রেখে যেতে চাই। সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে যাতে আগামী মন্ত্রী হজ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে।”
ধর্ম উপদেষ্টা আরও জানান, প্রয়োজন হলে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তাও নেওয়া হবে। তিনি হুজুরদের সুবিধার জন্য বিমান ও আবাসনের খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখের বেশি হাজি সৌদি আরবগামী হন। হজের সময় বিমান ভাড়া সাধারণত বৃদ্ধি পায়। অতীতে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে হাজিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সরকার আগেও বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। ২০২৩ সালে সাশ্রয়ী হজ ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক ও বাজারভিত্তিক কারণের জন্য অনেক সময় এই পরিকল্পনা কার্যকর হয়নি।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
হজ যাত্রীর জন্য বিমান ভাড়া কমানো সরাসরি অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করবে। সাধারণ জনগণ এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছে। হজ কর্মকর্তারা মনে করেন, সাশ্রয়ী ব্যবস্থাপনা হাজিদের জন্য যাত্রা সহজ করবে এবং হজ কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে।
অপরদিকে, বিমান সংস্থা ও ট্যুর অপারেটররা কিছুটা উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, ভাড়া কমানো হলে লভ্যাংশ কমতে পারে। তবে ধর্ম উপদেষ্টার সাথে সমন্বয় করে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
বিশ্লেষণ ও পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হজের সময় ভাড়া কমানোর জন্য সরকারকে সময়মতো বিমান সংস্থা, হজ কর্তৃপক্ষ এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে হবে। এতে না শুধুমাত্র ভাড়া কমবে, বরং হজের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও সুষ্ঠু হবে।
বিশেষজ্ঞরা আরও মন্তব্য করেন, আবাসন ও যাতায়াতের সাশ্রয়ী ব্যবস্থা প্রায়শই হজ যাত্রীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকারের এই উদ্যোগকে প্রশংসিত করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ হাজি সৌদি আরব যান। বিমান সংস্থাগুলি হজের সময় সাধারণত ২০–৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে। এই বৃদ্ধির কারণে হাজিদের অর্থনৈতিক চাপ বেড়ে যায়।
ধর্ম উপদেষ্টার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে, ভাড়া কমানো এবং আবাসন সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে হাজিদের সাশ্রয়ী হজ নিশ্চিত করা সম্ভব।
ধর্ম উপদেষ্টার এই মন্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, সরকার হজের সময় ভাড়া কমানো ও সাশ্রয়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তবে নির্বাচনের কারণে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কতটা দ্রুত হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুষ্ঠু সমন্বয় এবং আগাম প্রস্তুতি হজ যাত্রীর জন্য বড় সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। ফলে হজ কার্যক্রম আরও সহজ, সাশ্রয়ী এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে।
এম আর এম – ১৩৭৪,Signalbd.com