মা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে জয়

২ minutes read

ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয় গত শুক্রবার (৬ জুন) ভারতের গোপন স্থানে তার মা শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। দীর্ঘদিনের দূরত্বের পর এটি জয় ও তার মায়ের প্রথম সাক্ষাৎ হওয়ায় দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারতে যাত্রা: পেছনের গল্প

গত ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যায় এবং তিনি দেশে আসা থেকে বিরত থাকেন। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনি গ্রিন কার্ড ও পাসপোর্ট পাওয়ার পর তার ভ্রমণ পরিকল্পনা পরিবর্তিত হয়।

জয় প্রথমে তার ভারতের সফর কয়েক মাস পরে করার কথা ভাবছিলেন, কিন্তু পারিবারিক কারণে সফরটি এগিয়ে আনা হয়। ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সূত্রে জানা যায়, জয় ভারতে গিয়ে গোপনীয়তার সর্বোচ্চ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পেয়ে পৌঁছেছেন।

সাক্ষাৎ ও নিরাপত্তা: গোপনীয়তার পর্দা

ভারতের বিমানবন্দর থেকে সরাসরি শেখ হাসিনার গোপন ঠিকানায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন। এ সময় জয় ও শেখ হাসিনার দীর্ঘ দিনের বন্ধন ও সম্পর্কের গল্পও পুনরুজ্জীবিত হয়।

তবে ভারতীয় সূত্রের মতে, এই সাক্ষাৎ অনেকটাই পারিবারিক ও ব্যক্তিগত; রাজনৈতিক আলোচনার চেয়ে আবেগিক সমর্থন ও মা-ছেলের সম্পর্ককে জোরদার করাই মুখ্য ছিল।

সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও দিল্লির কর্মসূত্র

শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত। যদিও সায়মা ও সজীব ওয়াজেদের মধ্যে সাক্ষাতের বিষয় নিশ্চিত নয়, তথাপি তাদের পারস্পরিক যোগাযোগ নিয়ে আলোচনা চলেছে।

কলকাতা সফর নিয়ে গুঞ্জন ও পরিষ্কার ব্যাখ্যা

ভারতে সজীব ওয়াজেদের আগমন নিয়ে শুরু থেকেই গুঞ্জন ছিল তিনি কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকাতেও যাবেন এবং সেখানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির বরাত দিয়ে জানা গেছে, এই সফরে কলকাতায় আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। এছাড়া, সজীবের দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থানের কথাও সত্য নয় বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সজীব ওয়াজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত: কি আসছে সামনে?

সজীব ওয়াজেদের এই সফর শুধু পারিবারিক মিলনই নয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও তা গুরুত্ব বহন করে। দেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষমতাচ্যুত নেতাদের মধ্যে সজীবের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে অনেকের কৌতূহল। তার ভারত সফর এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ নতুন রাজনৈতিক কূটনৈতিক সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মিলন ও সফর এক ধরনের পুনঃসংযোগের প্রতীক, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি এখনও আসেনি।

বিস্তারিত বিশ্লেষণ: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও রাজনৈতিক প্রভাব

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পারস্পরিক প্রভাব বিস্তার করে। সজীব ওয়াজেদের এই সফর এবং শেখ হাসিনার ভারতীয় ভ্রমণ রাজনীতির পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, দুই দেশের সরকারের মধ্যে পারিবারিক রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হওয়া দুই দেশের কূটনীতিক প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য ও সম্ভাব্য প্রত্যুত্তর

সজীব ওয়াজেদ জয় এখনও এই সফর নিয়ে কোনো প্রকাশ্য বক্তব্য দেননি। তবে তার সফরের তথ্য ভারত ও বাংলাদেশের গোপনীয় সূত্র থেকে উঠে আসায় রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সফরের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে তার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসতে পারে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারত সফর এবং তার সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন আলো সৃষ্টি করেছে। পারিবারিক মিলনের আড়ালে রাজনৈতিক সম্ভাবনার সন্ধান মিলছে। এই সফর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।

সজীব ওয়াজেদের ভারত সফর ও পারিবারিক সাক্ষাৎ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ও আপডেট পেতে Singnalbd.com-এ চোখ রাখুন।

মন্তব্য করুন