ইরানের পারমাণবিক মূলকেন্দ্রে আঘাত হেনেছে: দাবি নেতানিয়াহুর

মধ্যপ্রাচ্যে টালমাটাল পরিস্থিতি, ইসরায়েলি হামলায় কাঁপছে ইরান
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, আজ শুক্রবার ভোররাতে চালানো এক যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইরানের নাতানজ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রসহ একাধিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানা হয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন,
“আমাদের অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু। যত দিন প্রয়োজন, তত দিন এই অভিযান চলবে।”
হামলার বিস্তারিত
আল–জাজিরার বরাতে জানা গেছে, ভোররাত চারটার কিছু পর তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণ হয়েছে আবাসিক এলাকাতেও, যদিও হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, রাজধানীর ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড (IRGC) সদর দপ্তরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।
নাতানজ কেন্দ্র: কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
নাতানজ শহরটি ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু। এখানেই রয়েছে শতাধিক সেন্ট্রিফিউজ ও গবেষণাগার।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন,
“এই কেন্দ্র থেকে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ এগিয়ে নিচ্ছিল।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে এই একই স্থাপনায় সাইবার হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছিল ইরান।
বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করেই হামলা?
নেতানিয়াহুর ভাষ্যমতে,
“যেসব বিজ্ঞানী ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির সঙ্গে জড়িত, তাঁদের লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে।”
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় ইরানের অন্যতম পারমাণবিক বিজ্ঞানী ফারেদুন আব্বাসি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া IRGC প্রধান হোসেইন সালামি-ও হামলায় নিহত হন, যা আলাদা একটি বড় ধাক্কা ইরান সরকারের জন্য।
ইসরায়েলের অবস্থান: ‘প্রতিরোধমূলক আক্রমণ’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন,
“ইরানের সম্ভাব্য হামলা রুখতে আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।”
জরুরি অবস্থা জারি
ইরানে হামলার পরপরই ইসরায়েলজুড়ে ‘বিশেষ জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে নেতানিয়াহু সরকার। মূলত সম্ভাব্য ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র পাল্টা হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
- জাতিসংঘ দুই দেশের প্রতি ‘সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান জানিয়েছে
- যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়
- রাশিয়া ও চীন নিন্দা জানিয়েছে এবং কূটনৈতিক সমাধান চেয়েছে
সম্ভাব্য পরিণতি: একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, একাধিক শীর্ষ বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ায় ইরান প্রতিশোধমূলক হামলায় যেতে পারে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।