বিশ্ব

জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মোদি

শুল্কারোপ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরিবর্তে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

সিদ্ধান্তের বিস্তারিত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সরাসরি যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই খবর শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) হিন্দুস্থান টাইমস, এনডিটিভি ও অন্যান্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

প্রাথমিকভাবে ২৬ সেপ্টেম্বর মোদি বক্তব্য রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে চূড়ান্ত তালিকায় মোদির পরিবর্তে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেকোনো সময় তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কারোপ সংক্রান্ত চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এসেছে। গত কয়েক মাসে দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও শুল্ক নিয়ে বিরোধ ক্রমশ বাড়ছিল। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদির অনুপস্থিতি ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের একটি অংশ।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালের অধিবেশনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। ভারতের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মঞ্চ, যেখানে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ থাকে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

মোদি অধিবেশনে উপস্থিত না হওয়ায় ভারতের কূটনৈতিক উপস্থিতি এস জয়শঙ্করের মাধ্যমে বজায় থাকবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদির অনুপস্থিতি কিছু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বার্তা বহন করছে।

ভিস্তারিত সংবাদে বলা হয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত চাপ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক কারণে প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত হবেন না। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “মোদি সরাসরি না গেলেও জয়শঙ্করের উপস্থিতি ভারতের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি যথাযথভাবে তুলে ধরবে।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই ভারতের পরিবর্তিত অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত জানেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি ভারতের কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যা দেশকে শুল্কারোপ ও বাণিজ্য চাপ থেকে কিছুটা দূরে রাখবে।

মিডিয়া বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মোদি নিজে না গেলেও ভারতের নীতি ও বক্তব্য স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হবে। এর মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সমন্বয় করে কূটনৈতিক কৌশল গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

বিশ্লেষণ

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদির অনুপস্থিতি ভারতের পক্ষ থেকে একটি সতর্ক সংকেত হিসেবে ধরা যেতে পারে। এর মাধ্যমে দেশটি চরম চাপের মধ্যে সরাসরি অংশগ্রহণ এড়িয়ে কিছুটা কৌশলগত সুবিধা পেতে চায়।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, শুল্কারোপ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোদির অনুপস্থিতি ভারতের অবস্থানকে আরও সংহত করতে সাহায্য করবে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের কৌশলগত লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতিসংঘে উপস্থিত না হওয়া কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এস জয়শঙ্করের মাধ্যমে ভারতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হলেও, মোদির অনুপস্থিতি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।
ভবিষ্যতে ভারতের আন্তর্জাতিক নীতি ও বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর এই সিদ্ধান্তের প্রভাব কীভাবে পড়বে, তা মূলত পরবর্তী কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করবে।

এম আর এম – ১২১১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button