সারাদেশের ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে সাড়ে ৬ লাখ আনসার সদস্য

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারাদেশের ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে সাড়ে ৬ লাখ আনসার সদস্য। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ শনিবার গাজীপুরে আনসার একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ আনসার সতেজকরণ প্রশিক্ষণ–২০২৫ (৫ম ধাপ)–এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান।
নির্বাচনে আনসারের প্রস্তুতি
মহাপরিচালক জানান, নির্বাচনের সময় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যদের সঙ্গে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। কোনও ধরনের নাশকতার চেষ্টা ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, নতুন করে এক লাখ ৮০ হাজার আনসার সদস্যকে উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণে যারা সফলভাবে টিকে থাকবেন, তারা আনসার বাহিনীতে সেবা দেওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান ও উপস্থিতি
সমাপনী অনুষ্ঠানে আনসারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপ-মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলাম, একাডেমি কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ নুরুল আবছারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আনসার সদস্যদের সততা ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা, গোলযোগ বা নাশকতার ঘটনা কখনও কখনও নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে।
এর ফলে আনসার সদস্যদের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। নতুন সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
সারাদেশে ভোটকেন্দ্রে সাড়ে ৬ লাখ আনসার মোতায়েন হলে সাধারণ ভোটার, নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের জন্য এটি একটি আশ্বাস হিসেবে কাজ করবে। স্থানীয় প্রশাসন মনে করছে, আনসারের উপস্থিতি নির্বাচনী পরিবেশকে শান্তিশীল রাখবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেন, “নিরাপত্তার জন্য এমন প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভোটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও শান্তি বজায় রাখতে সহায়ক হবে।”
প্রযুক্তি ব্যবহার ও আধুনিকায়ন
মহাপরিচালক উল্লেখ করেন, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। এটি নিরাপত্তা বাহিনীকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ দেবে।
প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে নাশকতা বা অনিয়মের ঘটনা সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং আনসার সদস্যরা সঠিক সময়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তুতি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উন্নত প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নির্বাচনকে নিরাপদ ও নিরপেক্ষ করার জন্য কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।
আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সমন্বয় কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না, বরং ভোটারদের আত্মবিশ্বাসও বাড়াবে।
শেষ কথা
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাড়ে ৬ লাখ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। উন্নত প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নির্বাচনী পরিবেশকে শান্তিশীল রাখবে। আনসারের সততা ও ত্যাগ নির্বাচনের সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এম আর এম – ১০০৯, Signalbd.com