গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে দুজন নিহত

গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত দুজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে গাজার খান ইউনিসে আরও তিনজন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করার পর ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় কার্যকর হয়। এর মেয়াদ সপ্তাহান্তে শেষ হলেও যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় এখনই কার্যকর করা উচিত, যা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত করবে। অন্যদিকে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি এপ্রিল পর্যন্ত সাময়িক বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
হামাসের কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেন, “যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়াতে ইসরায়েলের দাবি সামগ্রিক অগ্রগতিকে শূন্যের কোঠায় ঠেলে দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে রুখতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে যেকোনো উদ্যোগ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।”
মানবিক সহায়তার সংকট
টানা ১৫ মাস ধরে চলা সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দাকে টিকিয়ে রাখার জন্য খাবার, জ্বালানি সহ সব পণ্যের সরবরাহের ওপর গত রোববার পূর্ণ অবরোধ আরোপ করেছে ইসরায়েল। ফলে মিসর সীমান্তে গাজায় প্রবেশের জন্য পণ্যবাহী শত শত লরি আটকে রয়েছে। গাজার বাসিন্দারা বলছেন, নতুন সরবরাহের প্রত্যাশায় দোকানগুলো খালি করে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু এখন সরবরাহ আটকে দেওয়ায় রাতারাতি আটার বস্তার দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলি ইসরায়েলের অবরোধের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি মানবিক সংকটকে আরও গভীর করছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সংস্থা গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দ্রুত মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
গাজার পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে সেখানে মানবিক সংকট আরও তীব্র হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির সফল বাস্তবায়ন এবং মানবিক সহায়তার প্রবাহ পুনরুদ্ধার না হলে গাজার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
এদিকে, গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আলোচনা চলছে, যাতে দ্রুত একটি স্থায়ী সমাধান বের করা যায়।