ফ্যাক্ট চেক

 ‘কালো জাদু’ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় জানালেন আহমাদুল্লাহ


জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘কালো জাদু’, জিন ও বদ নজর থেকে বাঁচার ইসলামি উপায় জানিয়ে লিফলেট প্রকাশ করেছেন। এতে কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আত্মরক্ষার জন্য।

হঠাৎ আলোচনায় ‘কালো জাদু’ থেকে বাঁচার পরামর্শ

জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্প্রতি ‘কালো জাদু’ এবং জিন বা বদ নজর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় তুলে ধরে একটি পরামর্শমূলক বার্তা প্রকাশ করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি বিষয়টি তুলে ধরেন। পোস্টে তিনি জানান, বর্তমান সময়ে সমাজে জিন, বদ নজর ও কালো জাদুর শিকার মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে, এবং অনেক পরিবার এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আহমাদুল্লাহর বক্তব্য: কুরআন-সুন্নাহর মাধ্যমে আত্মরক্ষা

ফেসবুক পোস্টে আহমাদুল্লাহ লিখেছেন, “বদ নজর, জিন-শয়তান ও কালো জাদুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অসংখ্য জীবন ও পরিবার এর ভুক্তভোগী।”

এই পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়ে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একটি তথ্যবহুল লিফলেট তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কুরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে আত্মরক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আমাদের আফতাবনগর অফিসে এসে লিফলেট সংগ্রহ করা যাবে। যারা দূরে থাকেন, তারা চাইলে পিডিএফ আকারে লিফলেটটি ডাউনলোড করতেও পারবেন।”

কালো জাদু: ইসলামে অবস্থান ও প্রতিরক্ষা

ইসলামে কালো জাদু একটি নিষিদ্ধ ও নিন্দিত বিষয়। এটি এমন এক ধরনের অপকর্ম, যার মাধ্যমে মানুষ জিন বা শয়তানদের সহায়তায় অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। ইসলামি স্কলারদের মতে, কালো জাদু থেকে আত্মরক্ষা পেতে হলে প্রথমেই তাওহিদের প্রতি মজবুত ঈমান গড়ে তুলতে হয়।

বিশেষ করে কিছু নির্দিষ্ট আয়াত ও দোয়াগুলো নিয়মিত পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে এসব অনিষ্ট থেকে বাঁচা সম্ভব।

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে করণীয়

আহমাদুল্লাহ যেসব আমল বা করণীয়ের পরামর্শ দিয়েছেন, তার মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে নিচের বিষয়গুলো:

  • সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সূরা ফালাকসূরা নাস প্রতিদিন সকালে ও রাতে তিনবার করে পাঠ করা।
  • ঘুমানোর আগে তিনবার ফালাক ও নাস পড়ে শরীরে ফুঁ দিয়ে মালিশ করা।
  • সকাল-সন্ধ্যার নিয়মিত যিকির, যেমন “আউযু বিখালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক”।
  • রাসূল (সা.) প্রদত্ত হাদিসভিত্তিক দোয়াগুলো পাঠ করা।

এই আমলগুলো নিয়মিতভাবে পালন করলে আল্লাহর হেফাজতে থাকা সম্ভব হয় এবং এসব অনিষ্ট শক্তির হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

কেন বাড়ছে কালো জাদুর শিকার?

সমাজে নৈতিকতা ও ধর্মীয় অনুশাসনের দুর্বলতা, হিংসা-বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় অনেকে প্রতিপক্ষকে কষ্ট দিতে কালো জাদুর মতো নিষিদ্ধ পন্থার আশ্রয় নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মিক দূর্বলতা এবং কুরআন-হাদিস থেকে দূরে সরে যাওয়া এই সমস্যাগুলোর মূল কারণ।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

দেশের কয়েকজন ইসলামি চিন্তাবিদ মনে করছেন, এ ধরনের লিফলেট বা নির্দেশনা সমাজে সচেতনতা তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, “সামাজিকভাবে আমরা যখন ধর্মীয় শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক সচেতনতা থেকে সরে আসি, তখন এ ধরনের অপশক্তি সহজেই মানুষের জীবনে অনুপ্রবেশ করতে পারে। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করাই একমাত্র সুরক্ষা।”

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ ও আহ্বান

আহমাদুল্লাহর এই উদ্যোগ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

অনেকে ফেসবুকে মন্তব্য করে লিফলেট সংগ্রহের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। অনেকেই বলছেন, এই ধরনের তথ্যভিত্তিক দিকনির্দেশনা সমাজে ধর্মীয় সচেতনতা বাড়াবে এবং মানুষকে সঠিক পথ দেখাবে।

“বদ নজর, জিন-শয়তান ও কালো জাদুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে”—শায়খ আহমাদুল্লাহ

সারসংক্ষেপ  

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কালো জাদু ও জিন সংক্রান্ত আতঙ্ক একটি বাস্তব বিষয়। এ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি থাকলেও কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক আমলের মাধ্যমে এসব অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

শায়খ আহমাদুল্লাহর এই লিফলেট সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন রয়ে যায়, ধর্মীয় শিক্ষার অভাবে আমরা আরও কতদিন এসব অদৃশ্য বিপদের শিকার হব?

এম আর এম – ০৩৭৭, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button