বিশ্ব

কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ঠেকাতে বিল আনছেন বার্নি স্যান্ডার্স

মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, তিনি একটি নতুন বিল আনতে যাচ্ছেন, যা কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমতি ছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান নিষিদ্ধ করবে। এই বিলের মাধ্যমে ফেডারেল সরকারের অর্থ ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হবে।

স্যান্ডার্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ একটি পোস্টে লিখেছেন, “আমাদের যুক্তরাষ্ট্রকে নেতানিয়াহুর অবৈধ ইরান যুদ্ধের ফাঁদে ফেলা যাবে না।” তিনি আরও বলেন, “আমি এমন একটি আইন আনতে যাচ্ছি, যাতে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ইরানে বা ইরানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক শক্তি ব্যবহারে ফেডারেল তহবিল ব্যবহার করা যাবে না। তবে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকবে।”

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক নীতির সমালোচনা

বার্নি স্যান্ডার্স গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক নীতির কঠোর সমালোচক। তিনি গত শুক্রবার নেতানিয়াহুর একতরফা ইরান হামলার নিন্দা জানিয়ে সতর্ক করেছেন যে, এতে করে পুরো অঞ্চলে বড় যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।

স্যান্ডার্সের এই বিল উত্থাপনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ঘিরে ওয়াশিংটনে বাড়তে থাকা উদ্বেগ রয়েছে। গত শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েল ইরানের রাজধানী তেহরানসহ আটটি শহরে বড় আকারের বিমান হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা এবং ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানা। এই হামলায় ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানীরা নিহত হন।

ইরানের পাল্টা হামলা

ইরানের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলা চালানো হয়। প্রথমে প্রায় ১০০ ড্রোন ছোড়ে এবং পরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরানের দাবি, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২০ শিশুসহ অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। শনিবারও হামলা অব্যাহত ছিল।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দেশই এই সংঘাতের তীব্রতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এই সংঘাতের ফলে তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংঘাতের ফলে পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়তে পারে। সুতরাং, বার্নি স্যান্ডার্সের এই বিলের মাধ্যমে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া সামরিক অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা যাবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বার্নি স্যান্ডার্সের এই উদ্যোগের ফলে কংগ্রেসের মধ্যে একটি নতুন আলোচনা শুরু হতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, এই বিলের মাধ্যমে সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হবে।

এছাড়া, এই বিলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ নীতিতে একটি পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি আরও গুরুত্ব পাবে।

বার্নি স্যান্ডার্সের এই নতুন বিল কেবল একটি আইনগত উদ্যোগ নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক বার্তাও। এটি প্রমাণ করে যে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমতি নেওয়ার গুরুত্বকে স্বীকার করছে।

এখন দেখার বিষয় হলো, এই বিলটি কংগ্রেসে কিভাবে গৃহীত হয় এবং এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ নীতিতে কি ধরনের পরিবর্তন আসে।

এই পরিস্থিতি নিয়ে আরও তথ্য ও বিশ্লেষণের জন্য আমাদের সাথে থাকুন।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button