৫ আগস্টে সারাদেশে গণমিছিল করবে জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আগামী মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, সারাদেশে শান্তিপূর্ণ গণমিছিল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এ কর্মসূচি সফল করতে দেশব্যাপী দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
ঘোষণার বিস্তারিত
শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক লিখিত বিবৃতিতে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “২০২৪ সালের জুলাইয়ের ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা ৫ আগস্ট সারাদেশে শান্তিপূর্ণ গণমিছিলের আয়োজন করছি। এই কর্মসূচি সফল করতে দেশের সব মহানগরী ও জেলা শাখাকে আমরা প্রস্তুতি নিতে বলেছি।”
তিনি আরও জানান, দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে গণমিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে যাতে এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করা যায়।
কেন এই গণমিছিল
জুলাই ২০২৪ সালে সংঘটিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দলটি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে উল্লেখ করছে। সেই ঘটনার বার্ষিকী উপলক্ষে তারা এই গণমিছিল আয়োজন করেছে।
দলটির মতে, এই মিছিল শুধু স্মরণ অনুষ্ঠান নয়, বরং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ এবং জনগণের দাবি-দাওয়া তুলে ধরারও একটি মাধ্যম।
গত বছর জুলাই মাসে সংঘটিত আন্দোলনকে জামায়াত একটি গণজাগরণের সূচনা হিসেবে দাবি করে আসছে। সে সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের ছাত্র আন্দোলন হয়, যা দেশব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠে। এর পরবর্তী সময় থেকেই জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন দাবি ও সংস্কারের পক্ষে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করছে।
আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে তারা মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর অংশ হিসেবেই এই ৫ আগস্টের গণমিছিল।
সংগঠনের প্রস্তুতি
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশনায় ইতিমধ্যে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে প্রস্তুতিমূলক সভা শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটি এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল সম্পন্ন করতে স্বেচ্ছাসেবক দল, শৃঙ্খলা কমিটি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বড় শহরগুলোতে মিছিলের রুট নির্ধারণ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়াও চলছে।
জনগণের প্রতি আহ্বান
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার তাঁর বিবৃতিতে দেশের সাধারণ মানুষকে উদ্দেশ করে বলেন, “এই কর্মসূচিতে সবাই যেন সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় এবং সুশৃঙ্খলভাবে মিছিল সম্পন্ন করে। আমরা চাই এই কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মতামত ও দাবির প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষিত হোক।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন সুষ্ঠু থাকে এবং কেউ যেন অশান্তি সৃষ্টি না করতে পারে, এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এই গণমিছিল সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি বড় বার্তা বহন করছে। গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর নানা কর্মসূচি থাকলেও, ৫ আগস্টের এই কর্মসূচি বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে কারণ এটি একটি বড় দলীয় শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ তৈরি করবে।
তাদের মতে, এই কর্মসূচি যদি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, তবে আগামীতে দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও জোরদার হতে পারে।
সামনে কী হতে পারে
জামায়াতের ঘোষিত এই কর্মসূচি সফল হলে আগস্ট মাসজুড়ে আরও বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করা হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ ধরনের মিছিল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে তৎপরতা বাড়াতে পারে।
তবে এই কর্মসূচির ফলাফল অনেকাংশে নির্ভর করবে প্রশাসন, সাধারণ জনগণ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়ার ওপর।
সংক্ষিপ্ত
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী ৫ আগস্ট সারাদেশে শান্তিপূর্ণ গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গণমিছিল সফল করার আহ্বান জানিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছে।
এম আর এম – ০৬৫০, Signalbd.com