জিম্মি মুক্তির জন্য হামাসকে আলটিমেটাম, নইলে যুদ্ধবিরতি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের

ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি অবসানের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যদি হামাস শনিবার দুপুরের মধ্যে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে তিনি এই চুক্তি বাতিল করে দিতে পারেন।
হামলার পটভূমি
২০২২ সালের ১২ আগস্ট নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে সালমান রুশদির ওপর হামলার পর হামাসের পক্ষ থেকে শর্ত অনুযায়ী জিম্মি মুক্তি স্থগিত করার কথা জানানো হয়। ট্রাম্পের এই হুমকি হামাসের এই ঘোষণার পর আসে।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় টানা ১৫ মাসের ইসরায়েলি হামলার লাগাম টানা হয়। এরই মধ্যে পাঁচ দফায় জিম্মি ও বন্দিবিনিময় করেছে হামাস ও ইসরায়েল।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা
ট্রাম্প বলেন, “যদি শনিবার ১২টার মধ্যে সব জিম্মিকে ফেরত দেওয়া না হয়, তাহলে আমি বলব, যুদ্ধবিরতি বাতিল করো।” তিনি আরও জানান, গাজার নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেওয়া হবে এবং সেখানে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “১৫ ফেব্রুয়ারি জিম্মি মুক্তির কথা রয়েছে। তবে পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত জিম্মি মুক্তি স্থগিত থাকবে।” তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের কারণে যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরতে দেরি হয়েছে এবং গুলির লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ ট্রাম্পের গাজা খালি করার প্রস্তাবকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে। অনেক বিশ্লেষকও একই মত পোষণ করেছেন। তবে ট্রাম্প এই বিষয়ে অনড় রয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জর্ডান ও মিসর গাজার বিষয়ে আমার পরিকল্পনার আওতায় ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আমি সম্ভবত তাদের জন্য সহায়তা বন্ধ করে দেব।”
আরব দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কো রুবিওকে জানিয়েছেন, আরব দেশগুলো ট্রাম্পের গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এদিকে, চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ট্রাম্পের এই হুমকি এবং হামাসের জিম্মি মুক্তির স্থগিতের সিদ্ধান্ত গাজার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি উদ্বেগজনক বিষয়। গাজার মানুষের নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে গেছে।