আঞ্চলিক

লক্ষ্মীপুরে বাস দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত, আহত ৫

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ উপজেলায় শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে গিয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সামনে সড়কে।

দুর্ঘটনার বিবরণ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৭টার দিকে নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস বেপরোয়া গতিতে চন্দ্রগঞ্জের কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সামনে পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে রহমতখালী খালে পড়ে যায়।

বাসে প্রায় ৩০ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর বেশিরভাগ যাত্রী জানালা ও দরজা দিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হলেও, কয়েকজন যাত্রী বাসের ভেতরে আটকা পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

উদ্ধার ও চিকিৎসা

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আটকা পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা হাসপাতালে পৌঁছানোর পর তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

অপর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহতদের পরিচয়

দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে।

চালকের অবহেলা ও বেপরোয়া গতি

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল এবং চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এটি চালকের অবহেলা ও বেপরোয়া গতির ফলস্বরূপ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয়রা বলেন, এই এলাকায় প্রায়ই বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। তারা প্রশাসনের কাছে সড়কে স্পিডব্রেকার ও ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রশাসনের পদক্ষেপ

দুর্ঘটনার পর পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তারা দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।

দুর্ঘটনার পরবর্তী পদক্ষেপ

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুপারিশ

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি সুপারিশ করেছেন:

  • সড়কে স্পিডব্রেকার স্থাপন করা।
  • ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো।
  • বাস চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।
  • সড়ক সংস্কার ও উন্নয়ন করা।

এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হবে বলে তারা মনে করেন।

সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

সড়ক দুর্ঘটনা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও সচেতন হতে হবে। সড়কে চলার সময় ট্রাফিক আইন মেনে চলা, হেলমেট ব্যবহার, সিটবেল্ট পরা ইত্যাদি অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে বাস দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত ও পাঁচজন আহত হওয়া একটি দুঃখজনক ঘটনা। এটি সড়ক নিরাপত্তার গুরুত্ব পুনরায় মনে করিয়ে দেয়। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসন, চালক ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তবেই আমরা একটি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব।

এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।

MAH – 12655,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button