ক্রিকেট

রিশাদের পাশে আফ্রিদি, লাহোরের টিকে থাকার আশা

পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) এবারের আসরে বাংলাদেশের তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন শুরুটা যেভাবে করেছিলেন, তাতে আশার আলো দেখেছিলেন লাহোর কালান্দার্স সমর্থকরা। প্রথম দুই ম্যাচে টানা তিনটি করে উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন তিনি। কিন্তু গতকালের ম্যাচে মুলতান সুলতানসের বিপক্ষে রিশাদ যেন একেবারেই হারিয়ে গিয়েছিলেন।

৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২টি—যদিও সেটিও ছিল গুরুত্বপূর্ণ, উসমান খান ও অ্যাশটন টার্নারের উইকেট। কিন্তু এত রান বিলিয়ে দেওয়ায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেননি তিনি। ব্যাটিংয়েও ছিলেন ব্যর্থ—মাত্র ৪ বলে করেন মাত্র ২ রান।

অধিনায়কের আস্থা এখনো অটুট

তবে এই ব্যর্থতার মাঝেও রিশাদের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন না লাহোর কালান্দার্স অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি বলেন,

“রিশাদ ভালো বোলিং করছে, উইকেটও পাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকের উইকেট আমাদের সহায় ছিল না। তবে টুর্নামেন্ট যত এগোবে, রিশাদ আরও কার্যকর হয়ে উঠবে।”

রিশাদের এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়া চোখে পড়ার মতো পারফরম্যান্স, যদিও তাঁর ইকোনমি রেট কিছুটা বেশি—৮.৫০। তবুও উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে লাহোরের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র করে তুলছে।

মুলতানের বিস্ফোরক ব্যাটিং ও লাহোরের হার

মুলতান সুলতানসের বিরুদ্ধে ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। পাওয়ার প্লেতেই মুলতান তুলে নেয় ৭৯ রান। লাহোরের সাতজন বোলার ব্যবহার করেও মুলতানের এই ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং থামানো যায়নি।

শেষ পর্যন্ত মুলতান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে তোলে ২২৮ রান। সেখান থেকে লাহোর কালান্দার্স ম্যাচে ফিরতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৩৩ রানে হার মানতে হয় তাদের।

দলের অবস্থা ও পরবর্তী সম্ভাবনা

এই হারের পর লাহোর কালান্দার্স ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তাদের নেট রান রেট +১.০৯৫, যা প্লে-অফে ওঠার আশা টিকিয়ে রাখছে। অধিনায়ক আফ্রিদি আশাবাদী,

“টুর্নামেন্ট সবে শুরু হয়েছে। এখনো অনেক ম্যাচ বাকি। আমরা ঘুরে দাঁড়াব।”

উইকেট সংগ্রহের লড়াইয়ে রিশাদ এখনো প্রতিযোগিতায়

তিন ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়া রিশাদ উইকেট সংগ্রহের দৌড়ে শীর্ষে থাকা জেসন হোল্ডার (১১ উইকেট, ইসলামাবাদ ইউনাইটেড) ও হাসান আলীর (১০ উইকেট, করাচি কিংস) পেছনে রয়েছেন। তাঁর সমান উইকেট আছে শাদাব খান (ইসলামাবাদ ইউনাইটেড) ও আব্বাস আফ্রিদির (করাচি কিংস) ঝুলিতেও।

রিশাদের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ভক্তরা

অল্প সময়ের মধ্যেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের জায়গা করে নেওয়া রিশাদ হোসেনের ওপর ভরসা রাখছেন তাঁর দলের অধিনায়ক থেকে শুরু করে সমর্থকরা। এক ম্যাচের ব্যর্থতা তাঁর সামর্থ্যকে ম্লান করে না। বরং তাঁর বোলিং বৈচিত্র্য ও উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে লাহোরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

পিএসএলের পরবর্তী ম্যাচগুলোতে রিশাদ ঘুরে দাঁড়াতে পারলে লাহোর কালান্দার্সও ফিরে পেতে পারে তাদের হারানো ছন্দ।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button