বিশ্ব

ইসরাইলি বোমায় একই পরিবারের ১২ সদস্য নিহত

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা অব্যাহত রয়েছে, যা এই অঞ্চলকে মৃত্যুর উপত্যকায় পরিণত করেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) গাজার বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী। এতে একই পরিবারের ১২ জন সদস্যসহ কমপক্ষে ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে, যারা আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছিল। জাবালিয়ার ব্যস্ত বাজার এলাকাও এই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

মানবিক অঞ্চল বাতিল: ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আতঙ্ক

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরাইল গোপনে গাজার ‘মানবিক নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো বাতিল করে দিয়েছে। اق

মানবিক সংকট: খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয়ের অভাব

গাজার মানবিক পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরাইলের অবরোধের কারণে ত্রাণ প্রবেশ প্রায় বন্ধ, যা উপত্যকাজুড়ে তীব্র খাদ্য সংকট সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার বেইত লাহিয়ায় একটি স্যুপ কিচেনে দেখা গেছে, অসংখ্য মানুষ খালি হাঁড়ি নিয়ে খাবারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। মার্চ মাস থেকে বেকারি বন্ধ, বাজারে খাদ্যপণ্য ফুরিয়েছে, এবং জরুরি খাবার বিতরণ কার্যক্রমও শেষের পথে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজার দুই মিলিয়নের বেশি মানুষ, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু, দুঃসহ জীবনযাপন করছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বৃহস্পতিবার জার্মানির অ্যাউশভিৎস কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ‘মার্চ অব দ্য লিভিং’ স্মরণানুষ্ঠানে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা এবং ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট ইজাক হারজোগ গাজা যুদ্ধ ও জিম্মি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট গাজায় সংঘাতের অবসান নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও, ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট জিম্মি সংকটকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করেন। এদিকে, স্পেন ইসরাইল থেকে ৭৫ লাখ ডলারের গোলাবারুদ কেনার চুক্তি বাতিল করেছে, যা বামপন্থি দলগুলোর চাপের ফলাফল।

যুদ্ধের পটভূমি

ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয়, যখন হামাস ইসরাইলে আক্রমণ চালায়। এতে ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। প্রতিশোধ হিসেবে ইসরাইল গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে। ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এই সংঘাতে ৫১,৩৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের ৭০% নারী ও শিশু।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button