আঞ্চলিক

প্রাইভেট কার নিয়ে পালাচ্ছিলেন যাত্রীরা, উল্টে প্রাণ গেল ৩ জনের

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একটি প্রাইভেট কার উল্টে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, প্রাইভেট কারের মধ্যে থাকা চারজন যাত্রী চালককে বাইরে রেখে গাড়িটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন, সেই সময়েই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার বিবরণ

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর যাত্রী ছাউনি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় হাইওয়ে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকামুখী লেনে দ্রুতগতির প্রাইভেট কারটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং সড়ক বিভাজনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়।

দুর্ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত হন। আহত দুইজনকে দ্রুত উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত এক জনের অবস্থা গুরুতর।

শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রাইভেট কারে যাত্রীর অভিযোগ

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রাইভেট কারে থাকা চারজন যাত্রী আসলে চালককে বাইরে রেখে গাড়িটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এই চেষ্টার সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং উল্টে যায়। এই দুর্ঘটনা থেকে বোঝা যায় যে, নিরাপত্তা উপেক্ষা এবং গাড়ি নিয়ন্ত্রণে অবহেলার কারণে এমন মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

শ্রীনগরে

শ্রীনগর উপজেলায় অতীতে এক্সপ্রেসওয়ে এবং হাইওয়ে সংলগ্ন এলাকায় একাধিক সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে সকাল বা ভোরবেলা দ্রুতগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বারবার নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করলেও কিছু যাত্রী নিরাপত্তা উপেক্ষা করে চলাচল করে থাকেন।

দুর্ঘটনার প্রভাব

এ ধরনের দুর্ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। শ্রীনগরের হাইওয়ে এলাকায় দ্রুতগতির যানবাহন চালানোর ফলে প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন ঝুঁকিতে থাকে। দুর্ঘটনার পরে এলাকার স্কুল, ব্যবসায়ী এবং যাত্রীরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করার দাবি করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “সকালবেলা এক্সপ্রেসওয়েতে অনেক প্রাইভেট কার দ্রুতগতি চালায়। প্রশাসনের উচিত সড়ক নিরাপত্তা কঠোর করা।”

প্রশাসনের পদক্ষেপ

হাইওয়ে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনার পরে দ্রুত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারকে প্রাথমিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত শুরু করেছে।

এছাড়া, পুলিশের পক্ষ থেকে আগামীতে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বিশেষ প্রচেষ্টা নেয়া হবে। চলতি মাসে একই ধরনের দুর্ঘটনা পুনরায় এড়াতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “গাড়ি ছেড়ে যাত্রীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং দ্রুতগতি দুর্ঘটনার মূল কারণ। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন উভয়কেই সচেতন করতে হবে মানুষকে।”

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, নিয়মিত ড্রাইভার ও যাত্রীর নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানো হলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব।

পরিশেষে

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার এই দুর্ঘটনা আবারও সড়ক নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। যাত্রীদের সতর্ক না থাকার কারণে এমন প্রাণহানি ঘটে। প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণকে একযোগে কাজ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটাতে না চাইলে যাত্রী এবং চালক উভয়কেই নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে হবে।

এম আর এম – ০৯৮৩, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button