‘প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনে নিচের স্তরে নামতে চাচ্ছে’

গতকাল রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবির মাধ্যমে পলিটেকনিক শিক্ষার ভবিষ্যৎকে সংকটাপন্ন করে তুলতে চাইছে। তাদের মতে, এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই এসব দাবি তোলা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা বলেন
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা বলেন, “যদি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের ৫ শতাধিক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বন্ধ হয়ে যাবে।” তারা আরও বলেন, “১৯৭৮ ও ১৯৯৪ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নামের আগে ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহার করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই অধিকার অস্বীকার করতে চাইছে।”
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদের নেতারা সরকারের কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নামের আগে ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহারের অনুমতি প্রদান।
- উপসহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগের সুযোগ বন্ধ করা।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বেতন ও পদমর্যাদা বৃদ্ধি করা।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদের নেতারা আরও বলেন, “আমরা সরকারের কাছে আমাদের সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
এদিকে, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দাবি হলো:
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নামের আগে ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহারের অনুমতি প্রদান।
- উপসহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি করা।
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা।
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলনকে যৌক্তিক দাবি হিসেবে তুলে ধরছেন। তাদের মতে, “ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নামের আগে ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং পেশাগত ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় হবে।”
বিশ্লেষণ:
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ধরনের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তবে, এই আন্দোলনটি পলিটেকনিক শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই, এই আন্দোলনের মাধ্যমে পলিটেকনিক শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা পুনরায় তুলে ধরা হচ্ছে।
প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন দেশের প্রযুক্তিগত শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত, এই আন্দোলনকে গুরুত্ব দিয়ে সুষ্ঠু সমাধানের পথ খুঁজে বের করা। তবেই দেশের প্রযুক্তিগত শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব হবে।
MAH – 12571, Signalbd.com