হঠাৎ ভাইরাল ‘দৌড়াও হাসিনা দৌড়াও’ গেম, তোলপাড় নেটদুনিয়া

খেলা শুরু হলে বাজতে থাকে শেখ হাসিনার কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা—‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি, দেবার কিছু নেই; আছে শুধু ভালোবাসা, দিয়ে গেলাম তাই’। হোঁচট খেয়ে পড়লে ভেসে আসে সংলাপ—‘কী অপরাধটা করেছি আমি?’
গুগল ক্রোমের বিখ্যাত ডাইনোসর গেমের আদলে তৈরি করা এই রাজনৈতিক স্যাটায়ার গেমটি বানিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাসরিফ বিন মিজান। গেমটির নাম—‘দৌড়াও হাসিনা দৌড়াও’। প্রকাশের পর মাত্র এক রাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে গেমটি, যা খেলেছেন কয়েক লাখ ব্যবহারকারী।
গেমের কাহিনী
নতুন এই স্যাটায়ার গেমে ডায়নোসরের স্থলে দৌড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি দৌড়াচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পেছনে। তাকে আটকাতে প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি হাতে বাঁশ নিয়ে অপেক্ষা করছেন।
গেমে খেলোয়াড়দের কাজ হলো শেখ হাসিনার চরিত্রকে দৌড় করিয়ে বাঁশ হাতে থাকা প্রতিপক্ষের আক্রমণ এড়িয়ে যাওয়া। খেলাটি শুরু হলে বাজতে থাকে শেখ হাসিনার কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা। পথে সংগ্রহ করতে হয় শেখ মুজিবের ছবি দেওয়া বিশেষ কয়েন।
গেমের জনপ্রিয়তা ও বিতর্ক
গেমটি প্রকাশের পর থেকেই এটি হাসি-তামাশার খোরাক জুগিয়েছে, তবে শুরু হয়েছে বিতর্কও। কিছু মানুষ এটিকে নিছক ব্যঙ্গাত্মক বিনোদন মনে করছেন, আবার অনেকে একে অসম্মানজনক বলে মনে করছেন।
তাসরিফ জানান, গেম প্রকাশের পর থেকে তিনি প্রচুর হুমকি পাচ্ছেন। তবে তিনি বলেন, “এমন কিছু যে ভাইরাল হবেই, তা আমি আগেই জানতাম।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
তাসরিফ জানিয়েছেন, গেমের ওয়েবসাইটে একটি প্লে স্টোর ভার্সন আসবে। তিনি আরও একটি নতুন গেম বানানোর পরিকল্পনা করছেন, যেখানে খেলোয়াড়ের ভূমিকায় থাকবে বিপ্লবী ছাত্র, জনতা, কর্মজীবী। তারা লড়াই করবেন ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে।
‘দৌড়াও হাসিনা দৌড়াও’ গেমটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি রাজনৈতিক স্যাটায়ারের একটি নতুন উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করছে। তাসরিফের এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও নতুন গেমের জন্ম দিতে পারে, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়গুলোকে নতুনভাবে উপস্থাপন করবে।