আঞ্চলিক

বাড়ি ফেরার সময় বাবা-ছেলেকে এলোপাতাড়ি গুলি

 চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়ায় ইউপি সদস্য রফিক উদ্দিন ও তার ছেলে মিজবাহ উদ্দিনের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রাত একটার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয় তাদের ওপর। আহত বাবা-ছেলেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

ঘটনা ও ঘটনার বিস্তারিত

লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া কুমিরাঘোনা এলাকায় সোমবার (১১ আগস্ট) রাত একটার দিকে ইউপি সদস্য মো. রফিক উদ্দিন (৫৫) ও তার ছেলে মিজবাহ উদ্দিন মিসহাল (২৩) গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি এবং তার ছেলে একটি সালিশি বৈঠক শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে আগাম ওতপেতে থাকা ৮-১০ জন দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় এবং দা দিয়ে কোপ মারতে শুরু করে।

অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সংঘর্ষের কারণ

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বক্কর জানান, এই হামলার পেছনে পূর্ব শত্রুতার জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি। তিনি বলেন, ‘পূর্বের কোনো বিবাদের জেরে এই হামলা হয়েছে বলে ধারনা করছি, তবে সঠিক কারণ তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’

এছাড়া লোহাগাড়া থানা অফিসার এসআই সিরাজ জানান, ঘটনাটি তাদের জানা গেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল না হওয়ায় তদন্ত শুরু করা হবে।

হামলার পর স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

হামলার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, ‘এমন বর্বরোচিত ঘটনা এলাকায় সন্ত্রাসের ভয়াবহতা বেড়েছে বলে বোঝায়।’ আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য সবাই দোয়া করছেন।

স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ও গণমাধ্যমের নজরও এখন বিষয়টিতে কেড়ে উঠেছে। তাঁরা পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছেন, দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।

চিকিৎসা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক ব্যবস্থা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, রফিক উদ্দিন এবং তার ছেলের অবস্থাও নাজুক। তাদের জরুরি চিকিৎসা চলছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে তারা।

এদিকে, এলাকার নিরাপত্তা জোরদারের জন্য পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে। হামলার পরে এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের ধরতে অভিযান চলছে।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

আইন ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের সশস্ত্র হামলা ঘটলে সামাজিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা।’

বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, ‘সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে স্থানীয় মানুষের সচেতনতা ও সহযোগিতা জরুরি। তবে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ ছাড়া এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।’

ভবিষ্যৎ প্রভাব ও পরবর্তী পদক্ষেপ

ঘটনার পর এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত সন্ত্রাস নির্মূলের ব্যবস্থা নেবেন।

আক্রান্ত পরিবার ও স্থানীয় জনগণের দাবি, যেন দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন হয় এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হয়। অন্যদিকে, এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলা আগামী দিনে স্থানীয় শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিশ্লেষকের মতে, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং সমাজে সুস্থ ভাবমূর্তি ফেরাতে প্রয়োজন সামাজিক সংহতি ও আইনি শৃঙ্খলা বজায় রাখা।’

সমাপ্তি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়ায় এই সশস্ত্র হামলা পুরো এলাকায় শোক ও উদ্বেগের ছায়া ফেলে দিয়েছে। হামলার কারণ ও অভিযুক্তদের ধরিয়ে আনার দাবি নিয়ে এখন তদন্ত শুরু হবে।

অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ সবাই মিলিতভাবে শান্তি রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবে—এটাই প্রত্যাশা। আগামী দিনে কি এই ধরনের হামলা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

এম আর এম – ০৮৩৪, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button