
রাজশাহীর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকের ওপর ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রী নিজ স্কুলের গেটের সামনে শিক্ষককে আক্রমণ করে। স্থানীয়রা তাকে আটক করে এবং আহত শিক্ষক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিস্তারিত
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজশাহীর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষক মারুফ খাকি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শিক্ষক স্কুল ছুটির পর মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ এক কিশোরী চিৎকার করতে থাকে। শিক্ষক বিপদে পড়েছে ভেবে কাছে গেলে, ওই ছাত্রী ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে তার ঘাড়ে আঘাত করে।
শিক্ষক প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও তার হাতে গুরুতর জখম হয়। আশপাশের অভিভাবক ও দোকানিরা দ্রুত এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন এবং ছাত্রীটিকে আটক করেন। শিক্ষক মারুফ খাকি বর্তমানে রাজশাহী সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তার ঘাড়ে তিনটি এবং হাতে চারটি সেলাই করা হয়েছে।
অভিযুক্ত
আত্মঘাতের চেষ্টা করা ছাত্রীটি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিল। বর্তমানে সে রাজশাহী বিজিবি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার বাবা রাজশাহীর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত এবং ছোট ভাই একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ছাত্রীটি ‘হেল্প হেল্প’ বলে চিৎকার করছিল। শিক্ষককে বিপদে পড়েছে ভেবে শিক্ষকের কাছে গেলে, হঠাৎ ছাত্রীটি ছুরি বের করে আঘাত করে। আশপাশের অভিভাবকরা তৎক্ষণাৎ এগিয়ে এসে শিক্ষককে উদ্ধার করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রীটিকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করে।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ দাখিল হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অনিচ্ছুক হলেও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিশেষজ্ঞ মতামত
মনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এ ধরনের আচরণ প্রাথমিকভাবে মানসিক চাপ, আঘাতপ্রাপ্ত বাল্যকাল বা স্কুলে চলা সামাজিক সমস্যার ফলাফল হতে পারে। বিদ্যালয় প্রশাসন ও অভিভাবকদের উচিত ছাত্রছাত্রীদের আচরণ, মানসিক স্বাস্থ্য ও সহপাঠীদের সঙ্গে সম্পর্ক মনিটর করা।
সম্ভাব্য প্রভাব ও সতর্কতা
এ ধরনের ঘটনা শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও স্কুল প্রশাসনের দায়িত্ব পুনর্মূল্যায়নের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিদ্যালয় এবং পরিবারকে যৌথভাবে নজরদারি বাড়াতে হবে এবং মানসিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।
শেষ কথা
ঘটনাটি শুধু শিক্ষকের জীবনেই নয়, স্কুলের পরিবেশেও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রশাসন ও অভিভাবকদের সতর্কতা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে এমন ঘটনায় রোধ করতে সহায়তা করবে।
এম আর এম – ০৯৪৪, Signalbd.com