
বাংলাদেশ ফুটবল মহলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল, যাদের সাম্প্রতিক সাফল্য জাতীয় গৌরব বৃদ্ধি করেছে, এবার অংশ নিতে যাচ্ছে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে। আগামি আগস্টে লাওসের ভিয়েন্টিয়ানে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আজ চূড়ান্ত করেছে ২৩ সদস্যের স্কোয়াড।
সম্পূর্ণ সাফজয়ী স্কোয়াডই খেলবেন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে
জাতীয় দলের কোচ পিটার বাটলার তার অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতায় আগের সাফল্য অর্জনকারী একই স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। গত মাসে ঘরের মাঠে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা ছয় ম্যাচে অপরাজিত থেকে ১৮ পয়েন্ট অর্জন করে শিরোপা জেতা দলের সকল খেলোয়াড়ই এবার লাওস যাত্রায় থাকবেন।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দলের স্কোয়াড (২৩ সদস্য):
গোলরক্ষক:
- স্বর্ণা রানী
- মিলি আক্তার
- ফেরদৌসি আক্তার
ডিফেন্ডার:
- জয়নব বিবি
- আফঈদা খন্দকার (অধিনায়ক)
- সুরমা জান্নাত
- কানোম আক্তার
- রুমা আক্তার
মিডফিল্ডার:
- স্বপ্না রানী
- কানন রানী
- ঐশী খাতুন
- অয়ন্ত বালা
- রুপা আক্তার
- বর্না খাতুন
- মুনকি আক্তার
- সিনহা জাহান
- শান্তি মার্ডি
- নাদিয়া আক্তার
ফরোয়ার্ড:
- পূজা দাস
- উমেলা মারমা
- মোসাম্মৎ সাগরিকা
- তৃষ্ণা রানী
- নবীরণ খাতুন
বাছাইপর্বের সূচি ও প্রতিদ্বন্দ্বী
বাংলাদেশ ‘এইচ’ গ্রুপে রয়েছে তিন শক্তিশালী দল—দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস এবং পূর্ব তিমুর।
- ৬ আগস্ট: বাংলাদেশ বনাম লাওস (স্বাগতিক)
- ৮ আগস্ট: বাংলাদেশ বনাম পূর্ব তিমুর
- ১০ আগস্ট: বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ কোরিয়া
৮ আগস্ট থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ দলের লড়াই, যেখানে প্রত্যেক ম্যাচই কঠিন পরীক্ষা। লাওসের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও স্থানীয় উষ্ণ আবহাওয়া অবশ্য বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হলেও, গত সাফল্য ও দলের একাগ্রতা এই বাধা অতিক্রমের শক্তি দেবে।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গুরুত্ব
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (AFC) আয়োজিত অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে মোট ৩৩ দল অংশগ্রহণ করছে। আটটি গ্রুপে বিভক্ত এই বাছাইপর্ব থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দলগুলো সরাসরি এশিয়ান কাপ খেলতে পারবে। এছাড়া গ্রুপে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী সেরা তিন দলও এশিয়ান কাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করবে, যার মূল আসর অনুষ্ঠিত হবে থাইল্যান্ডে।
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এশিয়ান বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত সফলতা কম। মোট ১২ ম্যাচে মাত্র ২টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাই এবার সাফজয়ী দলের মনোবল ও সুসংহত পরিকল্পনা সেই ধারা বদলের আশায় উজ্জীবিত করছে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের।
গত সাফল্যের প্রেক্ষাপট
১১-২১ জুলাই ২০২৫: বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে মুগ্ধকর পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। টানা ৬ ম্যাচে অপরাজিত থেকে শীর্ষ স্থান অর্জন করে শিরোপা জয় করে দলের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে অনেকগুণ। এই সাফল্যই এখন তাদের সামনে নতুন উচ্চতা স্পর্শের প্রেরণা হিসেবে কাজ করছে।
কোচ পিটার বাটলারের দৃষ্টিভঙ্গি
কোচ পিটার বাটলার আগেই জানিয়েছেন, এই দলটি শুধুমাত্র সাফজয়ী দলই নয়, তারা কেবল নিজেরাই নয়, পুরো জাতির গর্ব। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, দল লাওস থেকে ভালো ফলাফল নিয়ে ফিরবে এবং এশিয়ান ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করবে।
বাংলাদেশের ফুটবলে নারীর উত্থান
বাংলাদেশে নারী ফুটবল গত কয়েক বছর ধরে শক্তিশালী হচ্ছে। বিভিন্ন বয়সের দলে নিয়মিত প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে এই খেলার উন্নয়নে ব্যাপক মনোযোগ দেয়া হচ্ছে।
অনূর্ধ্ব-২০ নারী দলের সাফল্য শুধু ফুটবলের জন্য নয়, দেশের নারীদের প্রতি সামাজিক মনোভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি তরুণীদের ফুটবলে আগ্রহী করছে এবং ভবিষ্যতে দেশের ফুটবল উন্নয়নে এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের সাফল্য এ দেশের নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ গড়ার বড় ধাপ হবে। কঠিন গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে মূল আসরে যাওয়া মানে শুধু সম্মান নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারীদের ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান আরও মজবুত হওয়া।
দেশের ফুটবল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ভক্ত, মিডিয়া ও সমাজের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে নারীদের ফুটবলের উন্নতির জন্য। সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ থাকলে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশ আরও বড় বড় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
সিগনালবিডির অনুরোধ
আমরা আশা করি পাঠক ও ফুটবল প্রেমীরা দলের জন্য শুভকামনা করবেন। বাংলাদেশের ফুটবল তথা নারীদের খেলাধুলার উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন। নিউজ শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিন, যাতে সবার কাছে দলটির অর্জন পৌঁছায়।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়তে থাকুন সিগনালবিডিতে। বাংলাদেশ ফুটবল ও ক্রীড়ার আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
MAH – 12058, Signalbd.com