ওয়াকিটকি, চাপাতি ও প্রাইভেটকারসহ ভুয়া ডিবি পুলিশ গ্রেফতার

রাজবাড়ীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে সেলিম খান নামে এক যুবককে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দস্যুতায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, দুইটি ওয়াকিটকি, দুটি চাপাতি এবং নগদ টাকা।
ঘটনা ও গ্রেফতারের বিস্তারিত
ডিবি পুলিশ জানায়, সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওমেদ আলীর পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সেলিম খান (৪০) নামের যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি গোয়ালন্দ ঘাট থানার আব্দুর রব খানের পুত্র।
গ্রেফতারের সময় তার বসতবাড়ি থেকে দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, দুইটি ওয়াকিটকি, দুটি স্টিলের চাপাতি এবং নগদ ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। রাজবাড়ী ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মফিজুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত সেলিম খান আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
অভিযুক্তের কৌশল ও ঘটনার পদ্ধতি
ভুক্তভোগী আবু হানিফ জানান, ৫ মে দুপুরে তিনি রাজবাড়ী সদরের আলাদীপুর থেকে ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা তুলে অটোরিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের খানখানাপুর রেলগেটের কাছে কয়েকজন যুবক তার রিকশার গতিরোধ করে। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের মুখে তাকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে মারধর ও হাত-পা বেঁধে ব্যাংক থেকে তোলা ১ লাখ টাকা এবং মানিব্যাগে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা শহিদ ওহাবপুর আখ সেন্টারের পাশে নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়।
রাজবাড়ীতে এর আগেও ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দস্যুতার ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। তবে 이번 ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সেলিম খানের মাধ্যমে পুলিশের কার্যকর অভিযান নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশ বলেছে, এই ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটার জন্য এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হবে।
পুলিশি প্রতিক্রিয়া
ডিবি পুলিশ বলেছে, তারা এমন অপরাধীদের শনাক্ত এবং গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। অফিসার ইনচার্জ মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই না কেউ ভুয়া পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করুক। এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”
ভুক্তভোগীর প্রতিক্রিয়া
আবু হানিফ বলেন, “আমার জীবনের জন্য ভয় ছিল। তবে ডিবি পুলিশ আমার সহায়তায় দ্রুত এগিয়েছে। আশা করি অন্য কেউ এই ধরনের প্রতারণার শিকার হবে না।” ভুক্তভোগীর পরিবারও পুলিশের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ মতামত
ক্রাইম অ্যানালিস্টরা বলছেন, ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে দস্যুদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা জরুরি। তারা আরও বলেন, “এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে জনগণকে নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলা এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপে পুলিশকে দ্রুত অবহিত করা উচিত।”
সমাপ্তি
রাজবাড়ী ডিবি পুলিশের সফল অভিযানের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, নিয়মিত নজরদারি ও স্থানীয় সহযোগিতার মাধ্যমে এমন অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে বিশ্লেষকদের মতে, ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে অপরাধরোধে জনগণকেও সতর্ক থাকতে হবে। ভবিষ্যতে রাজবাড়ীতে এমন ঘটনা পুনরায় ঘটবে কি না, তা largely নির্ভর করছে পুলিশের তৎপরতা এবং জনসচেতনতার ওপর।
এম আর এম – ০৯৫৫, Signalbd.com