
এশিয়া কাপে ফাইনালে উঠতে বাংলাদেশের সামনে ছিল তুলনামূলক সহজ লক্ষ্য। মাত্র ১৩৬ রান তাড়া করতে নামলেও ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে লাল-সবুজরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১ রানে হেরে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। এতে শিরোপার লড়াইয়ে জায়গা করে নিয়েছে সালমান আলীর নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ভেঙে পড়ল স্বপ্ন
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ শুরু থেকেই চাপে পড়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই পারভেজ ইমন শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন। পরে সাইফ হাসান কিছুটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করলেও সঙ্গ দিতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। আফ্রিদির ধারালো ইনসুইং ও হারিস রউফের গতি সামলাতে না পেরে একে একে সাজঘরে ফেরেন শুরুর ব্যাটাররা।
মাত্র ৪৪ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারিয়ে বড় ধরনের চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর শামীম হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিব কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি দলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট হয়নি। শেষদিকে রিশাদ হোসেনের ছোট ক্যামিও ম্যাচে উত্তেজনা ফেরালেও আর জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি টাইগাররা।
বোলারদের সাফল্যের পরও ব্যাটিংয়ে ধস
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানও শুরুতে ধাক্কা খায়। ৫০ রানের আগেই অর্ধেক ব্যাটার হারায় তারা। তাসকিন আহমেদ শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করেন, তুলে নেন তিন উইকেট। রিশাদ হোসেনও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দুইটি উইকেট নেন।
কিন্তু মাঝপথে ফিল্ডিংয়ে ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণে কয়েকটি সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে আফ্রিদি, নাওয়াজ ও হারিস ছোট কিন্তু কার্যকর ইনিংস খেলেন। তাদের ব্যাটেই ১৩৫ রানের লড়াইয়ের পুঁজি পায় পাকিস্তান।
হারিয়ে গেল আরেকটি সুযোগ
২০১৬ সালের পর আবারও এশিয়া কাপে ফাইনালে ওঠার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। শক্তিশালী পাকিস্তানের বিপক্ষে বোলাররা ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করলেও ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় হার মানতে হলো। বিশেষ করে শুরুর উইকেট হারানো ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা ম্যাচ থেকে বাংলাদেশকে ছিটকে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের সমস্যাটা দীর্ঘদিন ধরেই একই জায়গায়। বোলাররা লড়াইয়ে রাখলেও ব্যাটাররা চাপের সময় দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হন। বিশেষ করে ছোট লক্ষ্য তাড়ায় পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি ও অভিজ্ঞতার ঘাটতিও প্রভাব ফেলেছে দলের ব্যাটিংয়ে।
একজন সাবেক অধিনায়ক বলেন, “বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক। কিন্তু ব্যাটিং ভেঙে পড়ায় ম্যাচে বারবার ব্যর্থ হতে হচ্ছে। ব্যাটারদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানো এখন সবচেয়ে জরুরি।”
সামনে কী?
এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নেওয়ায় নতুন করে হতাশা যুক্ত হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটে। তবে সামনে বিশ্বকাপকে ঘিরে প্রস্তুতি শুরু হবে খুব শিগগির। তাই এ ম্যাচের ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে নতুন পরিকল্পনা সাজানোই এখন সময়ের দাবি। ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা, ব্যাটিং বিভাগের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার পথ খুঁজে পাবে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এম আর এম – ১৫২৮,Signalbd.com