সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বড় পরাজয়, নারী দলের কাছে ১০৬ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এই জয়ের মাধ্যমে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে ক্যারিবীয় নারীরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তিশালী ব্যাটিং প্রদর্শনী
টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটিতে কিয়ানা জোসেফ ও অধিনায়ক হেইলি ম্যাথুস ৫.৩ ওভারে ৫৩ রান সংগ্রহ করেন। কিয়ানা ৩৬ বলে ৬৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৯টি চার ও ২টি ছক্কা। ম্যাথুসের ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে ২৭ রান।
তবে আসল ঝড় তোলেন ডিয়ান্ড্রা ডটিন। মাত্র ২০ বলে ৪৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে তিনি ৫টি ছক্কা হাঁকান। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ডটিন ২২ বলে ৫১ রান করেছিলেন। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২০১ রানের বিশাল স্কোর গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের বোলিং পারফরম্যান্স
বাংলাদেশের পক্ষে লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ৩টি উইকেট লাভ করেন। রাবেয়া খান ২ উইকেট নেন ২৬ রানে, এবং স্বর্ণা আক্তার ১ উইকেট শিকার করেন ২৬ রানে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সামনে বাংলাদেশের বোলাররা চাপে ছিলেন।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের সংগ্রাম
২০২ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। শারমিন আক্তার ২৫ বলে সর্বোচ্চ ২২ রান করেন। স্বর্ণা আক্তার ১৬ এবং লতা মণ্ডল অপরাজিত ১৩ রান করেন। কিন্তু দলের অন্য ব্যাটাররা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে ব্যর্থ হন, ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯৫ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাজয়
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রানের ব্যবধানে এটি বাংলাদেশের নারীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাজয়। এর আগে ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম ম্যাচে ১৩২ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দল ২০০ রানের বেশি সংগ্রহ করল। এর আগে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ১৮৯ রান করেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে।
সিরিজের পরবর্তী ম্যাচ
তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে। সিরিজে সমন্বিত পারফরম্যান্সের অভাব স্পষ্ট হওয়ায়, শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য এটি হবে সম্মান পুনরুদ্ধারের একটি সুযোগ।
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স
সম্প্রতি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সিরিজে ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই উন্নতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
উন্নতির জন্য করণীয়
বাংলাদেশ নারী দলের জন্য এই সিরিজটি একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। বিশ্বমানের দলের বিপক্ষে খেলার মাধ্যমে নিজেদের দুর্বলতা ও শক্তির জায়গা চিহ্নিত করা সম্ভব। বিশেষ করে ব্যাটিং অর্ডারে স্থিতিশীলতা ও বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল অর্জন করা যেতে পারে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের বড় পরাজয় দলের জন্য একটি সতর্কবার্তা। তবে এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে, এটাই সবার প্রত্যাশা।