বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।
মামলার পটভূমি
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আইএফআইসি ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলায় সাকিবসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি করা হয় গত ১৫ ডিসেম্বর, যেখানে মোট ৪ কোটি ১৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকার চেক ডিজঅনারের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।
এর আগে, ১৮ ডিসেম্বর আদালত সাকিবসহ চারজনকে সমন জারি করেন এবং ১৮ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। তবে নির্ধারিত তারিখে তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় রবিবার আদালত সাকিবসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
অন্য আসামিদের পরিচয়
মামলায় সাকিব ছাড়াও আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—
- গাজী সাহগীর হোসেন
- ইমদাদুল হক
- মালেকা বেগম
এদের সবার বিরুদ্ধে একই মামলায় আদালতের সমন অমান্যের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণ
মামলায় অভিযোগ করা হয়, চেক ডিজঅনারের ঘটনার পরও আসামিরা বিষয়টি সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেননি। আদালতের সমন জারি করা সত্ত্বেও তারা হাজির না হওয়ায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আইনজীবীদের মন্তব্য
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, চেক ডিজঅনার মামলাটি ব্যাংকিং আইনের অধীনে একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। সাকিবসহ অন্য আসামিরা আইন মেনে আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, সাকিবের আইনজীবী দাবি করেছেন, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি এবং বিষয়টি দ্রুত মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
চেক ডিজঅনার মামলা: কীভাবে কাজ করে?
বাংলাদেশের আইনে চেক ডিজঅনার একটি ফৌজদারি অপরাধ। নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট ১৮৮১-এর ১৩৮ ধারার অধীনে কোনো চেক যথাসময়ে অর্থায়ন না হলে এবং প্রাপকের দাবি সত্ত্বেও অর্থ প্রদান না করা হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। এই ধরনের মামলায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
সাকিবের ক্যারিয়ারে প্রভাব
সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল তারকা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আইনি সমস্যায় জড়িয়ে তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে প্রভাব পড়ছে।
তিনি একাধিকবার আইসিসি থেকে শাস্তি পেয়েছেন এবং অনেক বিতর্কে জড়িয়েছেন। এবার চেক ডিজঅনার মামলায় তার নাম আসায় এটি তার সুনাম এবং জনপ্রিয়তার ওপর বড় ধরনের আঘাত হতে পারে।
পরবর্তী ধাপ
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর আসামিদের আদালতে আত্মসমর্পণ করা জরুরি। তাদের আইনজীবীরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে আইন অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
সাকিব আল হাসানের মতো তারকা ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ একটি দুঃখজনক ঘটনা। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনা এড়াতে ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
Latest News Of Signalbd.com