জাতীয়

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন হাইকোর্টে নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৫ বিচারপতি

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে হাইকোর্টে নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৫ জন বিচারপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে এই সাক্ষাতটি অনুষ্ঠিত হয়।

এই সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি নতুন বিচারপতিদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, দেশের উচ্চতর আদালতে নতুন বিচারপতির নিয়োগের ফলে বিচার কার্যক্রম আরও দ্রুত এবং স্বচ্ছ হবে। তিনি আরও যোগ করেন, নতুন বিচারপতিরা তাঁদের দক্ষতা ও মেধা কাজে লাগিয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবেন, ফলে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন।

রাষ্ট্রপতির মতে, বিচারপতির দায়িত্ব শুধুমাত্র আদালতে বিচার প্রদান নয়, বরং ন্যায়বিচারের মানোন্নয়ন এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিদের সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাদারিত্বে অবিচল থাকার পরামর্শ দেন।

রাষ্ট্রপতির বক্তব্য: বিচারিক কার্যক্রমের মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে নতুন শক্তি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, “নতুন বিচারপতি নিয়োগ দেশের আদালত ব্যবস্থায় নতুন শক্তি ও উদ্দীপনা যোগ করবে। বিচারিক কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে এবং জনগণ দ্রুত ন্যায় পাবেন। বিচারপ্রার্থীদের সন্তুষ্টি ও ন্যায়বিচারের মান বৃদ্ধিই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিচারপতিরা তাদের দায়িত্বের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন এবং ন্যায়বিচারের মানোন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন। এই সাক্ষাতে বিচারপতিরাও রাষ্ট্রপতিকে আশ্বাস দেন, তারা সর্বদা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সচেতন থাকবেন এবং দেশের জনগণের আস্থা বজায় রাখবেন।

নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিদের পরিচিতি

গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি পদে ২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরদিন, ২৬ আগস্ট, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাদের শপথগ্রহণ করান।

নিচে নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতির বিস্তারিত তালিকা দেওয়া হলো:

  1. মো. আনোয়ারুল ইসলাম (শাহীন) – সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
  2. সাইফুল ইসলাম – আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব
  3. মো. নুরুল ইসলাম – চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ
  4. শেখ আবু তাহের – আইন ও বিচার বিভাগের সচিব
  5. আজিজ আহমদ ভূঞা – সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল
  6. রাজিউদ্দিন আহমেদ ও ফয়সাল হাসান আরিফ – সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
  7. এস এম সাইফুল ইসলাম – আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব
  8. মো. আসিফ হাসান ও মো. জিয়াউল হক – সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
  9. দিহিদার মাসুম কবীর – ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল
  10. জেসমিন আরা বেগম – হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ
  11. মুরাদ–এ–মাওলা সোহেল – বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব
  12. মো. জাকির হোসেন – ঢাকা মহানগর দায়রা জজ
  13. মো. রাফিজুল ইসলাম – সলিসিটর (সিনিয়র জেলা জজ)
  14. মো. মনজুর আলম, মো. লুৎফর রহমান ও রেজাউল করিম – ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল
  15. ফাতেমা আনোয়ার – সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
  16. মাহমুদ হাসান – ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল
  17. আবদুর রহমান, সৈয়দ হাসান যুবাইর – সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
  18. এ এফ এম সাইফুল করিম – ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল
  19. উর্মি রহমান – সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
  20. এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ – ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া ও গুরুত্ব

বাংলাদেশে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি পদে নিয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এটি মূলত সুপ্রিম কোর্ট ও আইন ও বিচার বিভাগের প্রস্তাবনা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়ে কার্যকর হয়। নতুন বিচারপতিরা তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং সততার মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থায় অবদান রাখেন।

নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতিরা প্রধানত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারের মান উন্নয়ন এবং জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য দায়িত্বশীল হন। এ ধরনের নিয়োগ দেশের আইনি প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে এবং ন্যায়বিচারে স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করে।

বিচারপতিদের সাক্ষাতের গুরুত্ব

রাষ্টপতির সঙ্গে নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতির সাক্ষাৎ শুধুমাত্র প্রথাগত সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। এটি বিচার ব্যবস্থায় নতুন শক্তি, নেতৃত্ব এবং প্রেরণা যোগ করে। নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সাক্ষাৎ বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং নতুন বিচারপতির মনোবল ও দায়িত্ববোধ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও আশা

নতুন বিচারপতিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে তাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত থাকার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তারা দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য দ্রুত, নিরপেক্ষ ও ন্যায়সঙ্গত বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এছাড়া, নতুন বিচারপতিরা মামলার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ব্যবহার করে আদালতের কার্যক্রম আরও দ্রুত ও দক্ষ করার পরিকল্পনা করছেন।

MAH – 12635,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button