আঞ্চলিক

ভাইয়ের বাইক থেকে পড়ে কাভার্ড ভ্যানে পিষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু

কুমিল্লা নগরীতে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে পেছন দিক থেকে আসা কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের নাম ইমন সরকার (২২), বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায়। তিনি কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন বা কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনার বিবরণ

ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে, কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ সংলগ্ন রামমালা এলাকায়

নিহত ইমন বড় ভাই সুমন সরকারের মোটরসাইকেলের পিছনে বসে ছিলেন। তাঁরা দুজনেই রামমালা হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বাড়ির পথে রওনা হন।

পথে রামমালা পানির ট্যাংক মোড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটোরিকশার সঙ্গে ধাক্কা লাগে মোটরসাইকেলের। এতে ইমন ছিটকে পড়ে যান। ঠিক সেই মুহূর্তে পিছন থেকে আসা একটি কাভার্ড ভ্যান তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই ইমনের মৃত্যু হয়।

ইমনের বড় ভাই সুমন সরকার আহত হয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অব্যবস্থাপনার অভিযোগ স্থানীয়দের

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রামমালা মোড় এলাকায় রাস্তার অর্ধেকজুড়ে প্রতিদিন দোকানদাররা মালামালের ক্যারেট রেখে দেয় এবং অটো ও মিশুকচালকরা বেপরোয়া ভিড় করেন রাস্তার ওপর। ফলে পুরো রাস্তাটিই সংকুচিত হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী শাহাদাৎ হোসেন বলেন,

“এই এলাকায় প্রতিদিনই দোকানদাররা ক্যারেট রেখে দেয়, অটো চালকেরা রাস্তার অর্ধেক দখল করে রাখে। আজ সেই কারণেই এই দুর্ঘটনাটা ঘটেছে।”

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ওহাব মিয়া বলেন,

“বারবার অনুরোধ করার পরও দোকানদারদের সরানো যায় না। এখানকার রাস্তার অর্ধেকটা ব্যবসার কাজে দখল করে রেখেছে তারা। এই দুর্ঘটনার জন্য তারাই দায়ী।”

পুলিশের পদক্ষেপ

কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মু. রকিবুল ইসলাম জানান,

“দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানটি আটক করা হয়েছে কিনা, কিংবা চালককে শনাক্ত করা গেছে কি না—সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরিবারে শোকের ছায়া

একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় পরিবারের সামনে থেকে চিরতরে হারিয়ে গেলো তরুণ ইমন সরকার। বড় ভাইয়ের সঙ্গে সকালে স্বাভাবিকভাবে বের হলেও ফেরেনি আর জীবিত হয়ে। কসবার গ্রামের বাড়ি ও কুমিল্লার ভাড়া বাসায় এখন শোকের মাতম

এই দুর্ঘটনা কেবল একটি পরিবারের নয়, বরং সম্পূর্ণ নগরের অব্যবস্থাপনার এক করুণ চিত্র। অসচেতন চালক, রাস্তা দখল, অবৈধ অটো স্ট্যান্ড এবং ফুটপাত বাণিজ্য—সব মিলিয়ে দায় কার?

সড়ক দুর্ঘটনার দায় শুধু চালকের না, এর দায় ভাগ করে নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসন, দোকানদার, অটো চালক ও নগর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button