মাগুরার শিশুর শারীরিক উন্নতি কম, চোখের পাতা নড়ার তথ্য মিলল

মাগুরার সেই শিশুটি আজ সোমবার সকালে প্রথমবারের মতো চোখের পাতা নেড়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থার খুব সামান্যই উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শিশুটির স্বাস্থ্যের এই অবস্থার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
সংবাদ ব্রিফিং
আজ সোমবার দুপুরের পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ কথা জানান। সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবও বক্তব্য দেন।
চিকিৎসা ও অবস্থান
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, “মাগুরার শিশুটির স্বাস্থ্যের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আজকেও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।”
চিকিৎসকদের তথ্য
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে শ্বাসনালির সমস্যার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। শিশুটির মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, সেটি এখনো অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বুকের মধ্যে যে বাতাস জমেছিল, সেটি দূর করা গেছে। চিকিৎসকেরা আশাবাদী যে দু–এক দিনের মধ্যে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে।
ধর্ষণের অভিযোগ
বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন মাগুরার আদালত।
ঘটনার বিবরণ
গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
মাগুরার এই শিশুর অবস্থা এবং ঘটনার প্রেক্ষাপট দেশের সমাজে একটি গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। শিশুর চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আশা করা হচ্ছে, শিশুটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।