আঞ্চলিক

৯৯৯ নম্বরে ফোন: কবর থেকে মিললো বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র

Advertisement

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন কলের ভিত্তিতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ এলাকা সংলগ্ন একটি কবর থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার সাত্তার এই তথ্য নিশ্চিত করেন। বেগমগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ওই ভাঙ্গা কবর থেকে দেশে তৈরি ৫টি নতুন একনলা বন্দুক ও ১টি পাইপগান উদ্ধার করে। লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার সীমান্ত সংলগ্ন এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং এই বিপুল অস্ত্র উদ্ধারের পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অস্ত্রের সন্ধান: কবরস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে কলারের ফোন

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন কলটির মাধ্যমে এই বিপুল অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে একজন কলার নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার জগদীশপুর থেকে ৯৯৯-এ ফোন করেন। কলার জানান, তিনি কবরস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি ভাঙ্গা কবরের ভেতরে বেশকিছু আগ্নেয়াস্ত্র দেখতে পেয়েছেন।

দ্রুত পদক্ষেপ: ৯৯৯ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানাকে দ্রুত অস্ত্র উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি জানানো হয়।

এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, জরুরি সেবা ৯৯৯ কিভাবে দ্রুততার সঙ্গে তথ্য সংগ্রহ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে পারে।

অভিযানে উদ্ধার: ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র

বেগমগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান শুরু করে। পুলিশের এই অভিযানে কবরস্থানের ভাঙ্গা কবরের ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃত অস্ত্র: পুলিশ ওই ভাঙ্গা কবর থেকে দেশে তৈরি ৫টি নতুন একনলা বন্দুক এবং ১টি পাইপগান উদ্ধার করে।

অস্ত্রের পরিমাণ ও ধরন: মোট ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ৫টি একনলা বন্দুক নতুন হওয়ায় পুলিশ ধারণা করছে, অস্ত্রগুলো হয়তো সম্প্রতি কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছিল।

পুলিশ ধারণা করছে, এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলো কোনো অপরাধী চক্র তাদের নিরাপত্তার জন্য বা ভবিষ্যতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কবরের ভেতর লুকিয়ে রেখেছিল।

আইনি প্রক্রিয়া: থানা হস্তান্তর ও মামলা

কবরস্থানটি লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। ঘটনাস্থলটি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার কলার জানালেও, ভৌগোলিকভাবে এটি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত।

হস্তান্তর: এই কারণে, উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো আইনি প্রক্রিয়ার জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আইনি পদক্ষেপ: চন্দ্রগঞ্জ থানা এ সংক্রান্ত পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হবে এবং অস্ত্রের উৎস ও তা লুকিয়ে রাখা চক্রকে চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত শুরু হবে।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার সাত্তার জানান, উদ্ধারকৃত অস্ত্রের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অস্ত্রের উৎসের রহস্য ও অপরাধী চক্র

কবরস্থানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখার ঘটনা এলাকায় এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে এনেছে:

কারা অস্ত্র রেখেছিল? এই অস্ত্রগুলো কোন অপরাধী চক্র বা রাজনৈতিক গোষ্ঠী লুকিয়ে রেখেছিল?

উদ্দেশ্য কী ছিল? নতুন অস্ত্রগুলো কি কোনো বড় ধরনের অপরাধ বা নির্বাচনের আগে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য মজুত করা হয়েছিল?

কবরস্থান কেন? কবরস্থানের মতো একটি ধর্মীয় ও সংরক্ষিত স্থানে কেন অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হলো? কবরস্থানকে নিরাপদ আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করার এই প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ এখন এই অস্ত্রগুলোর উৎস এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য জোর তদন্ত চালাবে। অস্ত্রগুলো দেশে তৈরি হওয়ায় অবৈধ অস্ত্রের কারবারিরাও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

অস্ত্র উদ্ধার ও জননিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ

৯৯৯ নম্বরে ফোন কলের মাধ্যমে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সংলগ্ন কবর থেকে ৫টি নতুন একনলা বন্দুকসহ ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা দেশের অবৈধ অস্ত্রের মজুদ এবং জননিরাপত্তার চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরেছে। কবরস্থানের মতো স্থানে অস্ত্র লুকিয়ে রাখার বিষয়টি প্রমাণ করে যে, অপরাধী চক্রগুলো কত কৌশলে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে শুধু অস্ত্র উদ্ধার নয়, বরং এর পেছনে থাকা মূল হোতা ও অবৈধ অস্ত্রের নেটওয়ার্ককে ধ্বংস করার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এম আর এম – ২৫৩৮, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button