রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান সংলগ্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে র্যাব-২ দশটি পেট্রোল বোমা ও ককটেল উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নাশকতামূলক কোনো কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে এগুলো স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
উদ্ধার অভিযান ও সময়সূচি
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে র্যাব-২ এর বিশেষ একটি দল মোহাম্মদপুরের ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চলাকালীন সময়ে ছয়টি পেট্রোল বোমা এবং চারটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকগুলো সরাসরি র্যাব সদর দফতরের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটে পাঠানো হয়েছে এবং সেখানে নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া চলছে।
র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অভিযান নিখুঁত পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে এবং তা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ধারণা ও উদ্দেশ্য
উদ্ধারকৃত বোমা-ককটেলগুলো থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের ডাকা লকডাউনকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কোনো ঘটনা ঘটানোর জন্য এগুলো মজুদ করা হয়েছিল।
র্যাবের বিশেষ দল পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য নিশ্চিতভাবে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
উদ্ধারকৃত বোমা ও ককটেলের প্রকারভেদ
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকগুলোর মধ্যে ছয়টি পেট্রোল বোমা এবং চারটি ককটেল রয়েছে। প্রতিটি পেট্রোল বোমা ছোট আকারের হলেও বিস্ফোরণে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম। ককটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক ডিভাইস সংযুক্ত, যা বিস্ফোরক শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়।
বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এগুলো নিষ্ক্রিয় করার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে যাতে আশপাশের জনবসতি ও রাস্তাঘাটে কোনো ক্ষতি না ঘটে।
মোহাম্মদপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি
উদ্ধার অভিযান ও বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়ার কারণে মোহাম্মদপুর এলাকা বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। র্যাবের পাশাপাশি পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিযানের সময় তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করলেও এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী আশ্বস্ত করেছে যে, জনসাধারণের কোনো ক্ষতি হবে না এবং পুরো এলাকায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা হয়েছে।
অতীতের নজির
মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আগে ওতোপূর্বে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পেট্রোল বোমা ও ককটেল উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে নির্বাচনী সময় ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের আগে এসব বিস্ফোরক মজুদের ঘটনা চোখে পড়েছে।
র্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের উদ্ধার অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে যাতে রাজধানী শহরে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করা না যায়।
বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের নাশকতা প্রমাণ করে যে, রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে কিছু দুর্বৃত্ত অতিরিক্ত কার্যক্রমের দিকে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত ও পরিকল্পিত উদ্ধার অভিযান জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, র্যাব ও অন্যান্য বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে রাজধানীতে যে কোনো অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
মোহাম্মদপুর থেকে উদ্ধারকৃত দশটি পেট্রোল বোমা ও ককটেল, এবং তা র্যাবের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া, রাজধানীর নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের অভিযান সতর্কতার সঙ্গে অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে যেকোনো নাশকতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এম আর এম – ২২১১,Signalbd.com



