রাজধানীর ধোলাইপাড়ে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাৎক্ষণিকভাবে বাসটির নাম জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন তারা।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে আমাদের কাছে সংবাদ আসে ধোলাইপাড়ে একটি বাসে আগুন লেগেছে। খবর পাওয়ার পর আমাদের একটি ইউনিট বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বাসটিতে কীভাবে আগুন লেগেছে তা আমরা জানতে পারিনি। এছাড়া হতাহতের কোনো সংবাদও আমাদের কাছে আসেনি।
পুলিশ ও তদন্তের প্রাথমিক তথ্য
ধোলাইপাড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আগুন লাগার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে এটি নাশকতা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আশেপাশের কয়েকটি দোকান ও গ্যারেজের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় এবং কয়েকটি সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে বাসে আগুনের এই ঘটনাগুলো নাশকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, “অপরাধীরা পরিবহন খাতে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছে, যাতে সাধারণ মানুষ ভয় পায় এবং চলাচলে বিরতি ঘটে।”
যাত্রী ও স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার সময় আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক দোকানপাট দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,
“আমরা হঠাৎ দেখি আগুন আর ধোঁয়া উঠছে। সবাই দৌড়ে দূরে সরে যাই। ভয় লাগছিল যে কোনো সময় বিস্ফোরণ হতে পারে।”
বাসে থাকা চালক ও হেলপার অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বলে জানা গেছে। তারা জানান, “আমরা গাড়ি চালু করছিলাম, হঠাৎ বাইরে থেকে আগুন ছোড়া হয়। তৎক্ষণাৎ নেমে যাই। না হলে বড় দুর্ঘটনা হতে পারত।”
প্রশাসনের মন্তব্য
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজধানীতে টানা বাসে আগুনের ঘটনাগুলো নাশকতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারি আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেন, “প্রতিটি এলাকায় সিসিটিভি মনিটরিং, রাস্তায় পুলিশ টহল এবং সন্দেহজনক চলাচল নজরে রাখা জরুরি। আগুন লাগানো কেবল সম্পদের ক্ষতি নয়, এটি জনসাধারণের মনে ভয় সৃষ্টির একটি কৌশল।”
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার জানিয়েছেন, “এই ঘটনায় কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অতিরিক্ত টহল জোরদার করা হয়েছে।”
সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদার
আগুনের ঘটনার পর ধোলাইপাড় ও আশেপাশের এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে পোড়া অংশ পরিষ্কার করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্ত চলমান এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধরনের অগ্নিকাণ্ডের পেছনে যেই থাকুক না কেন, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে যেন কোনো সন্দেহজনক চলাচল বা বস্তু দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়।
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বাসে আগুন দেওয়ার এই ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার একটি নতুন সংযোজন। যদিও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে এই ধরনের কর্মকাণ্ড শহরের নিরাপত্তা ও সাধারণ মানুষের মানসিক স্বস্তিতে প্রভাব ফেলছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ এবং নাগরিক সচেতনতার সমন্বয়ই এখন জরুরি — যেন এমন ঘটনা পুনরায় না ঘটে।
এম আর এম – ২২০১,Signalbd.com



