আঞ্চলিক

বাংলাদেশে ঢুকে জমির খুঁটি উপড়ে ফেললো বিএসএফ, স্থানীয়দের ধাওয়ায় পালালো

Advertisement

সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশে প্রবেশ করে স্থানীয় কৃষকদের ফসল রক্ষায় স্থাপিত খুঁটি উপড়ে ফেলে। স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তারা স্পিডবোটে সীমান্ত ত্যাগ করে। বিজিবি ঘটনার পরপরই কড়া সতর্কতা দিয়েছে।

ঘটনার বিবরণ

রোববার সকালে জকিগঞ্জের মানিকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর সীমান্তে চার সদস্যের বিএসএফ দল বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে। তারা কৃষকদের ফসল রক্ষায় স্থাপিত খুঁটি উপড়ে ফেলে। বিষয়টি দেখে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানান। উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএসএফ সদস্যরা স্পিডবোটে সীমান্ত এলাকা ছেড়ে চলে যায়।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, স্থানীয়রা বিএসএফ সদস্যদের কাছে জানতে চাচ্ছেন, তারা কোন নির্দেশে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন এবং কেন খুঁটি উপড়ে ফেলেছেন। স্থানীয়রা স্পষ্ট করে জানান, এই এলাকা বাংলাদেশের অংশ। উত্তেজনা বৃদ্ধির পর বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিএসএফকে সতর্ক করে।

সীমান্ত কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (১৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার জানান, ঘটনার পরপরই বিএসএফকে পতাকা বৈঠকে ডেকে আনেন। সেখানে বাংলাদেশ সীমান্তে অনধিকার প্রবেশের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে বিজিবির টহল ও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুশ শহীদ বলেন, “এ ধরনের অনধিকার প্রবেশ স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। আমাদের ফসল রক্ষার জন্য স্থাপিত খুঁটিগুলো তারা নষ্ট করেছে।”

সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে আগেও অনধিকার প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। পার্শ্ববর্তী ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী মাঝে মাঝে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে কৃষি জমি ও সীমান্তে স্থাপিত খুঁটি বা অবকাঠামো নষ্ট করার ঘটনা ঘটে। এই ধরনের প্রবেশে স্থানীয়রা মাঝে মাঝে প্রতিবাদ জানায় এবং বিজিবি বিষয়টি দ্রুত সমাধান করে।

উল্লেখ্য, সিলেট-জকিগঞ্জ সীমান্তে সুরমা নদী দিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। নদীর অপর পাশে ভারতীয় সীমান্ত, আর বাংলাদেশ অংশে স্থানীয় জনগণ বসবাস করে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

স্থানীয়দের মতে, এই ধরনের ঘটনা সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি করছে। কৃষকরা ফসল রক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরে খুঁটি স্থাপন করেছেন, যা অনধিকার প্রবেশের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বিজিবি কর্মকর্তা জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিএসএফকে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা প্রয়োজন এবং স্থানীয়দের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বিশ্লেষণ

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সীমান্তে অনধিকার প্রবেশ কেবল স্থানীয়দের ক্ষতি করছে না, বরং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে নিয়মিত সমন্বয় ও টহল ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় পর্যাপ্ত নজরদারি এবং সতর্কতা ছাড়া ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংঘর্ষ বা উত্তেজনা দেখা দিতে পারে। স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে সমন্বয় ও সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের অনধিকার প্রবেশ ও খুঁটি উপড়ে ফেলার ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিজিবির তৎপরতা এবং কড়া সতর্কবার্তা একপাশে থাকলেও সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং স্থানীয় জনগণকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

এম আর এম – ২০৬০,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button