সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলি পয়েন্ট এলাকা থেকে এনা পরিবহনের ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ছিনতাই ঘটেছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শাহ আলম নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। অভিযান সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে সম্পন্ন করা হয়।
দক্ষিণ সুরমা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মারফত আলী জানান, এনা পরিবহনের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক আমিনুল ইসলাম রুকন ছিনতাইয়ের পর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
ঘটনা ও অভিযানের বিস্তারিত
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এনা পরিবহনের কর্মচারীরা কদমতলি পয়েন্ট এলাকা থেকে ব্যাংকে টাকা পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম, ক্যাশিয়ার সোহেল আহমদ এবং নুর মোস্তফা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ছিলেন।
প্রতক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, হঠাৎ পাঁচটি মোটরসাইকেলে ১০ জন ছিনতাইকারী এসে তাদের পথরোধ করে। ছিনতাইকারীদের সবার মাথায় হেলমেট ছিল এবং তারা ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে ত্রাস সৃষ্টি করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার সাথে যুক্ত আকিকুর রহমান ফরহাদ নামের আরও এক অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযান চালানো হলেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, মোটরসাইকেলগুলির মধ্যে কেবল একটি নম্বরপ্লেটযুক্ত ছিল, কিন্তু তা স্কচটেপ দিয়ে ঢাকা ছিল। পুলিশের ধারণা, এটি পূর্বপরিকল্পিত ছিনতাই।
সিলেটের কদমতলি এলাকা দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অপরাধে জড়িত। বিশেষ করে আকিকুর রহমান ফরহাদ এলাকার পরিচিত মুখ, যার নাম ছিনতাই এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
এ ধরনের ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে, তবে এবার টাকার পরিমাণের কারণে স্থানীয় ও ব্যবসায়িক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিক্রিয়া
এনা পরিবহনের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক আমিনুল ইসলাম রুকন বলেন, “এ ধরনের ঘটনা সহনীয় নয়। আমরা পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি না হলে এমন ঘটনা পুনরায় ঘটতে পারে।
পুলিশি তদন্ত ও পদক্ষেপ
পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে এবং অভিযান চালাচ্ছে। তদন্তে জানা গেছে, ছিনতাইকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। এছাড়া, পুলিশের নজরে এসেছে অভিযুক্তদের আরেকটি সম্ভাব্য লুকানো ঘাঁটি।
দক্ষিণ সুরমা থানা জানিয়েছে, আরও একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগরীর ব্যস্ত এলাকায় এই ধরনের ছিনতাই পূর্বপরিকল্পিত এবং পেশাদারিত্বপূর্ণ। তারা মনে করছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে।
স্থানীয় সমাজ ও ব্যবসায়িক নেতারা পুলিশি তৎপরতার প্রশংসা করলেও দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপের ওপর জোর দিয়েছেন।
সিলেটে এনা পরিবহনের ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও পুরো চক্র ধ্বংস করতে আরও অভিযান প্রয়োজন। নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি এবং সক্রিয় পুলিশি পদক্ষেপই ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারবে।
এম আর এম – ১৯৯০,Signalbd.com



