পটুয়াখালীর লোহালিয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও ধর্ষণ মামলার সাক্ষী হওয়ার জেরে স্থানীয় বিএনপি নেতা মফিজুল মৃধাকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে পুলিশের ওপর হামলায় পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিস্তারিতঃ
ঘটনাটি ঘটে গত ৮ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজারে ঘটে। নিহত মফিজুল স্থানীয় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এলাকার এক ধর্ষণ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন মফিজুল। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিপক্ষ সোহাগ মাঝি ও তার সহযোগীরা ওই রাতে তাকে বাজার এলাকায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে এএসআই জহির, এসআই আবদুর রহমান, কনস্টেবল মহিবুল্লাহ, রানা ও সাইফুল ইসলাম আহত হন। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গুরুতর অবস্থায় মফিজুলকে প্রথমে পটুয়াখালী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। টানা ২০ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
নিহতের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামী অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল বলেই ওরা তাকে হত্যা করেছে। ওর কোনো দোষ ছিল না। আমার দুই মেয়ে মিম আর ফাতিমা এখন কাকে বাবা বলবে?’
নিহতের বোন সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘ভাইকে আগেও হুমকি দিয়েছিল তারা। পুলিশকে জানালেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। আজ আমার ভাই নেই।’
নিহতের মা আকলিমা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে মানুষ করেছি সৎ পথে চলার জন্য। ন্যায়ের পাশে থাকায় আজ তার প্রাণ গেল।’
পুলিশ অভিযান
ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আমিনুল হক চৌধুরী (৪৫), পলাশ হাওলাদার (২৫) ও রমজান আলী (৬৫) নামে তিনজনকে আটক করেছে।
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দেয়া ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আলাদা মামলা দায়ের করা হয়েছে।’



