আঞ্চলিক

সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটক থাকা ড্যাফোডিলের ১১ শিক্ষার্থীকে হস্তান্তর

Advertisement

সাভারের সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটক থাকা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীকে আজ (২৭ অক্টোবর) দুপুরে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার খাতিরে তাদের সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে সাময়িকভাবে রাখা হয়েছিল।

সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষার্থীরা এখানে ঘুরে ফিরছিলেন, তবে রাতের অন্ধকারে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সাময়িকভাবে রাখা হয়েছিল। পরে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা এসে শিক্ষার্থীদের তাদের হাতে তুলে নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও নিরাপত্তা

প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়ার জানান, শিক্ষার্থীরা অনেকটা আটকা পড়েছিলেন। সিটি ইউনিভার্সিটি প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। কেউ যেন তাদের আঘাত করতে না পারে, সেই উদ্দেশ্যেই তাদের নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছিল।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর সৈয়দ মিজানুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীরা হস্তান্তরের সময় ব্যাপক মারধরের শিকার হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

হস্তান্তরের প্রক্রিয়া ও প্রশাসনিক দায়িত্ব

আজ দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে হস্তান্তরিত হন। সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের কিছু সদস্য উপস্থিত ছিলেন, যারা শিক্ষার্থীদের নিরাপদভাবে হস্তান্তরের দায়িত্ব সম্পন্ন করেন।

সৈয়দ মিজানুর রহমান আরও জানিয়েছেন, ইউজিসির প্রতিনিধিদলও উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের হস্তান্তর করা হয়। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিম এবং শিক্ষকবৃন্দও ছিলেন।

মারধরের অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় অভিযোগ করেছে, শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটিতে থাকার সময় মারধরের শিকার হয়েছেন। কিছু শিক্ষার্থী অর্ধমরা অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি করেছে।

এছাড়া অভিযোগ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের উপর জোরপূর্বক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় মনে করছে, কিছু অংশ শিক্ষার্থীকে হামলা চালানোর জন্য প্ররোচিত করা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া

সিটি ইউনিভার্সিটি দাবি করেছে, শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা হয়নি। প্রশাসন তাদের নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করেছে।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য শিক্ষার্থীদের হামলার জন্য প্রেরণা দেওয়ার অভিযোগ করেছে। উভয় বিশ্ববিদ্যালয় এখন নিরপেক্ষ তদন্ত ও সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।

সংঘর্ষের প্রভাব ও শিক্ষার্থী পরিবেশ

সিটি ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যকার এই সংঘর্ষ শিক্ষার্থী পরিবেশকে প্রভাবিত করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিটি ইউনিভার্সিটি সব ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে। শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত এবং হল ছেড়ে যেতে শুরু করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সতর্ক করে জানিয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সকল প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।

বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ করণীয়

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য বড় সতর্কবার্তা। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা বা প্ররোচনা বন্ধ করতে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পুনর্বাসন ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল হলেও নিরপেক্ষ তদন্ত না হলে পুনরায় উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।

এম আর এম – ১৯৬৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button