ঢাকায় বসবাসরতদের গড় মাথাপিছু আয় ৫১৬৩ ডলার, যা বর্তমান ডলার রেটে প্রায় ৬ লাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা। দেশের গড় মাথাপিছু আয় মাত্র ২,৮২০ ডলার। এই তথ্য প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) তাদের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচকে।
শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিলের ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
তথ্য ও পরিসংখ্যান
জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার অর্থনৈতিক অবদান দেশের জিডিপির ৪৬ শতাংশ। রাজধানীতে মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ এবং দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশের বেশি মানুষ বসবাস করছে। যা এশিয়ার অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
মোট রফতানির ৪০ শতাংশই ঢাকা থেকে হচ্ছে। এছাড়া ৩৬৫ প্রতিষ্ঠান দেশের উৎপাদন খাতের ৫৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। ২৮৯টি প্রতিষ্ঠান সেবাখাতের ওপর দখল রাখে এবং তৈরি পোশাক খাতের ৫৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে ২১৪টি প্রতিষ্ঠান।
ডিসিসিআই সূত্র জানিয়েছে, এই তথ্য দেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে ঢাকার গুরুত্বের ইঙ্গিত দেয়।
ঢাকার আয়ের পেছনের কারণ
ঢাকার মাথাপিছু আয়ের উচ্চতা মূলত শিল্প ও সেবা খাতের কারণে। তৈরি পোশাক শিল্প, ব্যাংকিং, প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও রফতানি খাত রাজধানীর আয়ের বড় অংশ নিশ্চিত করছে। রাজধানী শহরের অবস্থান, অবকাঠামো এবং ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধার কারণে ঢাকাবাসীর আয় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ শিক্ষা ও পেশাগত দক্ষতার উপস্থিতি ঢাকার অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরও শক্তিশালী করছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ঢাকার উচ্চ মাথাপিছু আয় দেশের মোট উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি দেশের বিনিয়োগ, ব্যবসা ও রফতানিকে আরও উৎসাহিত করবে।
ডিসিসিআই কর্মকর্তারা বলেন, “ঢাকার অর্থনৈতিক শক্তি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রয়োজন উন্নত পরিকল্পনা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার, যাতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও আয়ের সমতা বাড়ানো যায়।”
ভবিষ্যৎ প্রভাব ও সম্ভাবনা
ঢাকার আয়ের উচ্চতা দেশীয় বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করছে। এর ফলে রাজধানী শহর আরও ব্যবসায়িক ও শিল্পকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ঢাকার মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, চাকরি সৃষ্টি এবং বিদেশি বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়গুলোও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকার মাথাপিছু আয়ের উচ্চতা দেশের আর্থিক চিত্র ও নগর অর্থনীতির শক্তিকে প্রতিফলিত করছে। এটি ঢাকার গুরুত্ব, শিল্প ও সেবা খাতের অবস্থান এবং দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নির্দেশ করছে।
আগামী দিনে আরও সুষম অর্থনৈতিক নীতি এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে ঢাকার এই অবস্থান ধরে রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
এম আর এম – ১৯৪৩,Signalbd.com



